ভৈরবে যৌথ অভিযানে দুই দিনে ৪ জন গ্রেফতার
নিজস্ব প্রতিবেদক
র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) এবং পুলিশের যৌথ অভিযানে কিশোরগঞ্জের ভৈরবে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের উপর হামলার ঘটনায় জড়িত চারজন আসামী গ্রেফতার হয়েছে। (৫ ও ৬ অক্টোবর) শনিবার ও রবিবার শহরের বিভিন্ন এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃত আসামীরা হলেন শহরের কালিপুর এলাকার মৃত আকবর মিয়ার ছেলে মো: মজিবুর রহমান (৫৮) সে ১১নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি, ভৈরবপুর দক্ষিণ পাড়া এলাকার মৃত মস্তু মিয়ার ছেলে মাহমুদুল হাসান রিগ্যান (৪২) সে উপজেলা যুবলীগ আহবায়ক কমিটির সদস্য, তাতারকান্দি এলাকার ধন মিয়ার ছেলে মাছুম মিয়া (৩৪) সে ভৈরব পৌর যুবলীগের সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক ও ভৈরবপুর উত্তরপাড়া এলাকার ফজলু মিয়ার ছেলে রাফি মিয়া (২৪)সে সেচ্চাসেবকলীগ নেতা। উল্লিখিত ব্যক্তিরা দেশীয় অস্ত্রসহ সংগঠিতভাবে ছাত্রদের উপর আক্রমণ চালানোর অভিযোগে অভিযুক্ত।
অভিযান সূত্রে জানাযায়, গেল ১৯ জুলাই ভৈরবের লক্ষীপুর এবং কমলপুর এলাকায় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মিছিলের উপর হামলা হয়। হামলাকারীরা রামদা, কিরিচ, লোহার রড, হকিস্টিক, পেট্রোল বোমা ও ককটেলসহ ভয়ংকর অস্ত্র নিয়ে এ হামলা চালায়। এই ঘটনায় আহত ছাত্রদের পক্ষে মামুন মিয়া, আলম সরকার ও রুবেল মিয়া বাদী হয়ে পৃথক তিনটি মামলা দায়ের করেন।
মামলার ধারাসমূহের মধ্যে রয়েছে আইন শৃঙ্খলা বিঘ্নকারী অপরাধ (দ্রুত বিচার) আইন, ২০১৯, পেনাল কোড ১৮৬০-এর বিভিন্ন ধারা, এবং ১৯০৮ সালের Explosive Substances Act এর বিধান। এই মামলাগুলি সমাজে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করে, বিশেষত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় ঘটনাটি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।
র্যাব-১৪ ভৈরব ক্যাম্প সূত্রে জানায়, তারা গোয়েন্দা নজরদারি বাড়িয়ে আসামীদের অবস্থান নিশ্চিত করে। এর পরিপ্রেক্ষিতে, গত ৫ ও ৬ অক্টোবর বিভিন্ন সময়ে র্যাব ও পুলিশ যৌথ অভিযানে ভৈরবের কালিপুর, লঞ্চঘাট, তাতারকান্দি এবং মনমরা ব্রীজ এলাকা থেকে এজাহার নামীয় আসামীদের গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে মজিবুর রহমান স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং মাছুম মিয়া যুবলীগের সাংস্কৃতিক সম্পাদক হিসেবে পরিচিত। এছাড়া মাহমুদুর রহমান রিগ্যান পৌর যুবলীগ সহ-সভাপতি ও রাফি সেচ্ছাসেবকলীগ কর্মী।
র্যাব ক্যাম্পের স্কোয়াড কমান্ডার এএসপি মো: শহিদুল্লাহ বিজ্ঞপ্তীতে জানায়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে উক্ত আসামীরা হামলার সাথে সরাসরি জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। তাদের বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ভৈরব থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, মামলার সাথে জড়িত অন্যান্য পলাতক আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত থাকবে।
ভৈরব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ হাসমত উল্লাহ জানান, মুজিবুর মিয়া, রিগ্যান, মাসুম ও রাফি বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে দেশীয় অস্ত্রসহ ছাত্রদের উপর হামলার ঘটনায় করা মামলার আসামী। তাদেরকে আদালতের মাধ্যমে কিশোরগঞ্জ কারাগারে পাঠানো হয়েছে। বাকি আসামীদের গ্রেফতারের অভিযান অব্যহত রয়েছে।
Leave a Reply