কুলিয়ারচর সংবাদদাতা
কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচরে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ইমতিয়াজ বিন মুছা জিসান (৪০) কে প্রধান আসামি করে ২৮৪ জনের নামোল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরো ২শ’ জনের নামে কুলিয়ারচর থানায় মামলা করেছেন এক কলেজশিক্ষার্থী। শুক্রবার (৩১ আগস্ট) বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিজয়ের ২৬ দিন পর উপজেলার রামদী ইউনিয়নের আগরপুর পশ্চিম পাড়া গ্রামের মো. মজলু মিয়ার ছেলে অনার্স ৩য় বর্ষের ছাত্র মো. নয়ন মিয়া বাদী হয়ে এ মামলাটি দায়ের করেন। মামলা নম্বর- ১৫।
মামলায় অন্যান্য আসামিরা হলেন- রামদী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আলাল উদ্দিন (৫০), রামদী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মেজবাহ উদ্দিন শিশু (৫৫), উপজেলা আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক মো. সিরাজুল ইসলাম (৫৫), শ্রম ও জনশক্তি বিষয়ক সম্পাদক মাহবুবুর রহমান বিপ্লব (৪৫), ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক ও গোবরিয়া আব্দুল্লাহপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো. আব্বাস উদ্দিন (৫৫), উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য রাজু মিয়া (৫০), আওয়ামী লীগ নেতা ফাইজুল্লাহ মিয়া (৫৬), ব্যবসায়ী দেলোয়ার হোসেন লিটন (৫৫), সরকারি প্রথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. আকরাম হোসেন (৪০), রামদী ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য আ. হান্নান (৪৫), ছাত্রলীগ নেতা শহীদুল ইসলাম বাবু (৩০), গোবরিয়া আব্দুল্লাহপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নাজিরুজ্জামান নাজু (৪৮), উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক আলী ইসলাম (৩৫), যুবলীগ নেতা শরীফ হোসেন (৩৮), হাবিবুর রহমান রতন (৪৪), জামিয়া আরাবিয়া নূরুল উলূম কুলিয়ারচর মাদরাসার শিক্ষক মাওলানা জহির মিয়া (৪৭) ও যুবলীগ নেতা ফিরুজ খানসহ আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীগণ।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, দেশব্যাপী বৈষম্যবিরোধী কোটা আন্দোলন শুরু হলে সারাদেশের ন্যায় গত ৪ আগস্ট সকাল ১১টার দিকে ভৈরব-ময়মনসিংহ আঞ্চলিক সড়কের কুলিয়ারচর উপজেলাস্থ বাজরা বাসস্ট্যান্ডে শান্তিপূর্ণ ও যৌক্তিক আন্দোলন করতে থাকেন ছাত্র-ছাত্রীরা। এ সময় ছাত্র-ছাত্রীদের আন্দোলনকে নস্যাৎ করার জন্য আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ সহযোগী সংগঠনগুলো একসঙ্গে দেশীয় অস্ত্রাদীসহ আগ্নেয়াস্ত্র ও ককটেল নিয়ে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ ও ম্যাসাকার চালায়।
এ সময় উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ইমতিয়াজ বিন মুছা জিসান ও রামদী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আলাল উদ্দিনের হুকুমে আসামিগণ নিরীহ ছাত্র-ছাত্রীদের ওপর হামলা করে দোকানপাট ভাঙচুর, ধ্বংসযজ্ঞ ও লুটপাট করতে থাকে। তখন উপস্থিত ছাত্র-ছাত্রীরা তাদের ধ্বংসযজ্ঞ প্রতিরোধ করতে চাইলে হামলাকারীরা ছাত্র-ছাত্রীদের মারধর করে। এ সময় ছাত্র-ছাত্রীরা তাদের যৌক্তিক আন্দোলনের জন্য একত্রিত হয়ে স্লোগান ধরলে উপজেলা আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক মো. সিরাজুল ইসলামের নির্দেশে ছাত্র-ছাত্রীদের যৌক্তিক আন্দালনকে ছত্রভঙ্গ করার জন্য পরপর ৪টি ককটেল নিক্ষেপ করে বাজারের দোকানপাট ভাঙচুর ও লুটপাট করে হামলাকারীরা। তখন ছাত্র-ছাত্রীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়ে এবং ককটেলের ধোঁয়ায় অসুস্থ হয়ে পড়লে স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা নেয় তারা।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ইমতিয়াজ বিন মুছা জিসান ও রামদী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ্ব আলাল উদ্দিনসহ অন্যান্য আসামিদের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে না পারায় তাদের বক্তব্য নেয়া যায়নি।
কুলিয়ারচর থানার ওসি মো. সারোয়ার জাহান মামলা রুজু হওয়ার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
Leave a Reply