ভৈরবে মেঘনা নদীতে গোসল করতে নেমে পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী নিখোঁজ, উদ্ধার অভিযানে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল
ভৈরব প্রতিনিধি
কিশোরগঞ্জের ভৈরব উপজেলায় মেঘনা নদীতে গোসল করতে নেমে তৈয়বা (১০) নামে পঞ্চম শ্রেণির এক শিক্ষার্থী নিখোঁজ হয়েছে। সোমবার (৯ জুন) সকাল ১১টার দিকে ভৈরবের ত্রি-সেতু এলাকার হাবিলদার আব্দুল হালিম রেলওয়ে সেতুর নিচে এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে।
নিখোঁজ তৈয়বা ভৈরব পৌরসভার মুশকিলা হাটি এলাকার বাসিন্দা কামাল মিয়ার মেয়ে। সে স্থানীয় একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণিতে পড়তো।
সকাল ৯টার দিকে মা কবিতা বেগম ঘরের কাজ সেরে তার তিন কন্যাকে নিয়ে মেঘনা নদীর তীরে গোসল করতে যান। সাথে ছিল ৬ বছর বয়সী ছোট মেয়ে মরিয়ম, ১০ বছরের মেঝো মেয়ে তৈয়বা ও ১৪ বছর বয়সী বড় মেয়ে টিয়া। গোসলে যাওয়ার সময় কবিতা বেগম কাপড় ধোয়ার জন্য কিছু কাপড়ও সঙ্গে নিয়ে যান।
নদীর পাড়ে মা কাপড় ধোয়ার কাজে ব্যস্ত ছিলেন, আর মেয়েরা কয়েকজন সহপাঠীর সঙ্গে পানিতে নেমে বল খেলছিল। খেলাচলার একপর্যায়ে নদীর স্রোতের টানে বলটি দূরে চলে যায়। মেয়েরা সেই বল ধরতে এগোলে হঠাৎ করেই প্রবল স্রোতে তিন বোনই একসাথে পানির গভীরে তলিয়ে যেতে থাকে।
এ সময় স্থানীয় লোকজন ঘটনাটি দেখতে পেয়ে দ্রুত এগিয়ে আসে। তাঁরা বড় বোন টিয়া ও ছোট বোন মরিয়মকে উদ্ধার করতে সক্ষম হন। কিন্তু মেঝো মেয়ে তৈয়বা পানির গভীরে ডুবে যায় এবং নিখোঁজ থাকে।
স্থানীয়রা টিয়াকে উদ্ধার করে প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। চিকিৎসা শেষে তাকে বাড়িতে ফিরিয়ে আনা হয়।
ঘটনার খবর পেয়ে সকাল সাড়ে ১১টার দিকে ভৈরব নদী ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের একটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার অভিযান শুরু করে। তবে নদীর পানির প্রবল স্রোত, ঘূর্ণিপাক ও সেতুর পিলারের নিচে জলচাপের কারণে অভিযান ব্যাহত হচ্ছে।
নিখোঁজ তৈয়বার বাবা কামাল মিয়া বলেন, আমার স্ত্রী তিন মেয়েকে নিয়ে গোসল করতে গিয়েছিল। ওরা সাঁতার খুব একটা জানত না। হঠাৎ খেলতে গিয়ে বলটা স্রোতে ভেসে গেলে ওরা তা আনতে গিয়ে একসাথে পানিতে ডুবে যায়। স্থানীয়রা দুজনকে উদ্ধার করলেও আমার মেঝো মেয়ে তৈয়বাকে আর খুঁজে পাওয়া যায়নি। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস এসেছে, তারা চেষ্টা করছে, কিন্তু এখনো কোনো খোঁজ মেলেনি।”
ময়মনসিংহ ফায়ার সার্ভিসের ওয়্যার হাউস পরিদর্শক আজিজুল হক রাজন বলেন,খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের ডুবুরি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে যায় এবং উদ্ধার অভিযান শুরু করে। কিন্তু এখানে নদীর স্রোত খুবই প্রবল এবং সেতুর পিলারের নিচে ঘূর্ণিপাক থাকায় ডুবুরি দলের কাজ করতে সমস্যা হচ্ছে। সন্ধ্যা পর্যন্ত অভিযান অব্যাহত ছিল, আমরা পরদিনও প্রয়োজন হলে অভিযান চালিয়ে যাব।
Leave a Reply