ভৈরবে পাদুকা মার্কেটে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড: পুড়ে ছাই ৪০টি দোকান, প্রায় ২ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি
ভৈরব প্রতিনিধি
কিশোরগঞ্জের ভৈরব উপজেলার লালু কালু পাদুকা মার্কেটে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে অন্তত ৪০টি দোকান সম্পূর্ণভাবে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, বিদ্যুতের শর্টসার্কিট থেকেই এই অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়েছে। এতে আনুমানিক দুই কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানানো হয়েছে।
(২৪ মে) শনিবার দিবাগত রাত ১টার দিকে উপজেলার জলপরী পার্ক রোডসংলগ্ন এই মার্কেটে আগুন লাগে। তাৎক্ষণিকভাবে স্থানীয়রা আগুন দেখতে পেয়ে ভৈরব ফায়ার সার্ভিসে খবর দেন। খবর পেয়ে ভৈরব বাজার ফায়ার সার্ভিস ও নদী ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের তিনটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে প্রায় এক ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
ভৈরব ফায়ার সার্ভিস ওয়ারহাউজ ইন্সপেক্টর রাজন আহমেদ দৃশ্যপট নিউজকে বলেন, রাত ১২টা ৫০ মিনিটে আগুন লাগার খবর পাই। লালু কালু মার্কেট নদীর পাশে হওয়ায় নদী থেকে পানি টেনে আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করি। পরে বাজার স্টেশনের ইউনিটও এসে যোগ দেয়। আগুনে প্রায় ৩৫ থেকে ৪০টি দোকান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। প্রাথমিকভাবে শর্টসার্কিটকেই আগুনের কারণ বলে ধারণা করছি, তবে তদন্ত ছাড়া নিশ্চিত বলা যাচ্ছে না।
দোকান মালিকদের অনেকে ঘটনাস্থলে ছুটে এসে দেখেন তাদের সব মালামাল পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।
দোকান মালিক মো. শাহিন মিয়া বলেন,
খবর পেয়ে এসে দেখি আমার দোকানে আগুন জ্বলছে। সাটার খুলে দেখি সব মাল পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। আমার আনুমানিক ১২ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
আরেক ব্যবসায়ী মো. রাজু মিয়া বলেন, আজ শুক্রবার ছিল, তাই মার্কেট বন্ধ ছিল। আমার দোকানে আড়াই লাখ টাকা নগদ ছিল, সব পুড়ে গেছে। আমি এখন নিঃস্ব।
মার্কেট ব্যবসায়ী মো. হানিফ মিয়া বলেন,
আমরা কয়েকজন ব্যবসায়ী রাতে মার্কেট উন্নয়ন নিয়ে আলোচনা করছিলাম। হঠাৎ আগুন দেখে দৌড়ে এসে ফায়ার সার্ভিসে খবর দিই। মার্কেটের পাশেই দুটি পুকুর ছিল, কিন্তু সেগুলো ময়লা ও মাটি দিয়ে ভরাট করা ছিল। যদি পুকুরগুলো ঠিকঠাক থাকতো, তাহলে আরও দ্রুত আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা যেত।
মার্কেট মালিক পক্ষের প্রতিনিধি কাজী মাসুদ বলেন, আমাদের মার্কেট দেশের অন্যতম বৃহৎ পাদুকা শিল্প এলাকা। সামনে সারির প্রায় সব দোকান পুড়ে গেছে। ধারণা করছি, ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ২ কোটি টাকা হতে পারে।
এ অগ্নিকাণ্ডে জুতা তৈরির কাঁচামাল, যেমন—আটা, রাবার, সলিউশন ও কেমিক্যাল থাকায় আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে এবং নিয়ন্ত্রণে আনা কঠিন হয়ে পড়ে।
স্থানীয় ব্যবসায়ীরা মার্কেট এলাকার নিরাপত্তা ব্যবস্থার উন্নয়ন এবং পাশের পুকুরগুলো পুনঃখননের দাবি জানিয়েছেন। প্রশাসনের পক্ষ থেকে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ও ঘটনার প্রকৃত কারণ খতিয়ে দেখতে তদন্তের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।
Leave a Reply