1. admin@drisshopat-news.com : admin :
শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ০৬:২৭ অপরাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ
ইউনিসেফের তথ্যে এখনো বন্যায় ঝুঁকিতে ২০ লাখ শিশু ভৈরবে পেট কেটে অপারেশন না করেই সেলাই, হাসপাতালে চিকিৎসা গাফিলতির অভিযোগ ভৈরবে ৫০ হাজার টাকা দিয়েও মিথ্যা মামলার আসামী অটোরিকশাচালক দম্পতি: এসআই ও সোর্সের বিরুদ্ধে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ ভৈরবে বজ্রপাতে আহত তিন নারী পাদুকা শিল্পে শ্রম ও পরিবেশ সংক্রান্ত মানোন্নয়নে মাল্টি-স্টেকহোল্ডার কনসালটেশন সভা  নববর্ষের রঙে রাঙা ভৈরব: ত্রিবেণী পাড়ে হাজারো মানুষের প্রাণের উৎসব বাংলা নববর্ষের দিনই ভৈরবে গণহত্যা করা হয়েছিল ৫ শতাধিক নিরস্ত্র লোককে  জেলার শ্রেষ্ঠ সার্কেল অফিসার মো. নাজমুস সাকিব টিকে থাকার লড়াইয়ে ঐতিহ্যবাহী মৃৎশিল্প কুলিয়ারচরের কুমারপাড়ায় ভৈরবে চকলেটের প্রলোভন দেখিয়ে শিশুকে ধর্ষণের ঘটনায় কিশোর অপরাধী আটক ভৈরবে নানার বাড়িতে বেড়াতে এসে মেঘনা নদীতে তলিয়ে গেল দুই বোন, পরিবারে শোকের ছায়া
শিরোনাম
ইউনিসেফের তথ্যে এখনো বন্যায় ঝুঁকিতে ২০ লাখ শিশু ভৈরবে পেট কেটে অপারেশন না করেই সেলাই, হাসপাতালে চিকিৎসা গাফিলতির অভিযোগ ভৈরবে ৫০ হাজার টাকা দিয়েও মিথ্যা মামলার আসামী অটোরিকশাচালক দম্পতি: এসআই ও সোর্সের বিরুদ্ধে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ ভৈরবে বজ্রপাতে আহত তিন নারী পাদুকা শিল্পে শ্রম ও পরিবেশ সংক্রান্ত মানোন্নয়নে মাল্টি-স্টেকহোল্ডার কনসালটেশন সভা  নববর্ষের রঙে রাঙা ভৈরব: ত্রিবেণী পাড়ে হাজারো মানুষের প্রাণের উৎসব বাংলা নববর্ষের দিনই ভৈরবে গণহত্যা করা হয়েছিল ৫ শতাধিক নিরস্ত্র লোককে  জেলার শ্রেষ্ঠ সার্কেল অফিসার মো. নাজমুস সাকিব টিকে থাকার লড়াইয়ে ঐতিহ্যবাহী মৃৎশিল্প কুলিয়ারচরের কুমারপাড়ায় ভৈরবে চকলেটের প্রলোভন দেখিয়ে শিশুকে ধর্ষণের ঘটনায় কিশোর অপরাধী আটক ভৈরবে নানার বাড়িতে বেড়াতে এসে মেঘনা নদীতে তলিয়ে গেল দুই বোন, পরিবারে শোকের ছায়া

বাংলা নববর্ষের দিনই ভৈরবে গণহত্যা করা হয়েছিল ৫ শতাধিক নিরস্ত্র লোককে 

  • Update Time : সোমবার, ১৪ এপ্রিল, ২০২৫
  • ১২ Time View
বাংলা নববর্ষের দিনই ভৈরবে গণহত্যা করা হয়েছিল ৫ শতাধিক নিরস্ত্র লোককে 
নাজির আহমেদ আল-আমিন,ভৈরব 
আজ ১৪ এপ্রিল পহেলা বৈশাখ। ভৈরব গণহত্যা দিবস। একাত্তরের এই দিনে পাক বাহিনী ভৈরবের পানাউল্লার চরে পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদে খেয়া পারাপারের জন্য অপেক্ষমান ৫ শতাধিক নিরস্ত্র লোককে হত্যা করে। তাছাড়া একই দিনে ভৈরবের বিভিন্ন স্থানে আরো দুই শতাধিক লোককে গুলি করে হত্যা করা হয়।
জানা গেছে, বাণিজ্য কেন্দ্র ভৈরবে মানুষ সেদিন ব্যবসার হালখাতা, দোয়া-মাহফিল ও মিষ্টি বিতরণ নিয়ে ছিল ব্যস্ত ছিলো।
হঠাৎ করে ভৈরবের আকাশে দেখা যায় চারটি সাবর জেট বিমান, একাধিক হেলিকপ্টার এবং স্থল পথে ব্রহ্মপুত্র নদের ওপারে রামনগর ব্রীজ সংলগ্ন স্থানে  গানশীপ। পাক বাহিনী ওই এলাকা থেকে গানশীপ দিয়ে গুলি ছুড়তে ছুড়তে ভৈরবের দিকে অগ্রসর হয়। সামরিক বাহিনীর কয়েকটি হেলিকপ্টার থেকে ভৈরবের মধ্যেরচর এলাকায়, কালিপুর বাদশা বিলের পাড় পানাউল্লারচর ও কালিকাপ্রসাদ এলাকায় ছত্রীসেনা নামানো হয়। তখন পাক সেনার ভয়ে সাধারণ মানুষ পালাতে থাকে। অপরদিকে মুক্তিপাগল মানুষ যার যা কিছু ছিল তা নিয়ে প্রতিরোধে নামে। এক পর্যায়ে উপজেলার মধ্যেরচর এলাকায় জনতার লাঠি, দা,বল্লম নিয়ে ছত্রীসেনাদের প্রতিরোধ করার চেষ্টা করলে এখানে বেশ কয়েকজন নিরীহ গ্রামবাসীকে হত্যা করা হয়।
পাকিস্তানি ছত্রীসেনা ভৈরব শহরের প্রবেশ করার সময় পথিমধ্যে ব্যাপক হত্যাকাণ্ড, বাড়ি ঘরে অগ্নিসংযোগসহ মানুষকে আতঙ্কিত করে তোলে।
অপরদিকে হেলিকপ্টার থেকে কয়েকটি স্থানে নামার পর ছত্রীসেনা দল কয়েকটি ভাগে বিভক্ত হয়ে বিভিন্ন রাস্তা দিয়ে শহরে প্রবেশ করার সময় উপজেলার শিবপুর সংলগ্ন পানাউল্লারচর নামক খেয়া ঘাটে অপেক্ষমান নিরস্ত্র, নিরপরাধ মানুষকে সারিবদ্ধভাবে দাঁড় করিয়ে নিমর্ম ভাবে গুলি করে হত্যা করে। সেদিন ব্রহ্মপুত্রের পানি রক্তে লাল হয়ে যায়। ওই স্থানে হত্যা করা হয় সাড়ে ৫ শতাধিক শিশু, বৃদ্ধ ও মহিলাকে। একই দিনে পাক বাহিনী ভৈরবের মধ্যেরচর, গোছামারা, চন্ডিবের, কালিপুর, কমলপুর, ভৈরবপুর ও ভৈরব বাজারে আরো দু’শতাধিক নিরাপরাধ মানুষকে হত্যা করে। বিভিন্নভাবে আহত হয় কয়েকশত। সেদিন মেঘনা আর ব্রহ্মপুত্র নদের বুকে ভাসছিল শুধু লাশ আর লাশ। পাক সেনারা ওইদিন উম্মাদের মতো নারকীয় হত্যাযজ্ঞে মেতে উঠেছিল। পানাউল্লারচর (আলগড়া) ৫শতাধিক নিহতের মধ্যে পরে কিছু আত্মীয় স্বজনরা তাদের লাশ নিয়ে গেলেও বেশির ভাগ নিহতকে ওই স্থানে গণ কবর দেওয়া হয়।
সেই দিন তিনি ব্রহ্মপুত্র নদের কঁচুরিপানার নিচে লুকিয়ে থেকে জীবন বাঁচিয়েছেন। তবে সারি বদ্ধ ভাবে দাঁড়করিয়ে যে ৫ শাত লোককে হত্যা করা হয়েছিল তার মধ্যে তার পিতাও ছিলেন। তিনি বলেন স্বাধীনতা যুদ্ধে একদিনে এক স্থানে এত লোক হত্যার কথা তার জানা নেই। এই বিষয়ে তার দুঃখ হল, ভৈরববাসী এই দিনটির বিশেষ ভাবে স্মরণ করে না। তাছাড়া আজও অনেক  স্বজনহারা পরিবার পানাউল্লারচর পানাউল্লারচরে আত্মীয়দের গণ কবরের কাছে গিয়ে চোখের জল ফেলে। সেই স্থানের খেয়াঘাটে আজ তেমন পানি নেই। কারণ ব্রহ্মপুত্র নদ শুকিয়ে গেছে।
ভৈরবের সাধারণ মানুষ দিনটিকে গণহত্যা ও কালো দিবস হিসাবে আখ্যায়িত করে। তাই বাংলা নববর্ষের দিন কিছু কিছু ব্যবসায়ী দিনটির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে পুরাতন খাতাপত্র বদল করা থেকে বিরত থাকেন। পরে যে কোন সুবিধাজনক দিনে নতুন বছরের হালখাতা পরিবর্তন করে তারা। লক্ষ্য করা গেছে, এতদিন শুধু ওই স্থানে স্বাধীনতা ও বিজয় দিবসে ফুল দেওয়া আনুষ্ঠানিকতা ছাড়া বছর আর তেমন কিছুই করা হয়নি। এমনকি গেল বছর স্বাধীনতা দিবসে  প্রশাসনের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে বধ্য ভূমির স্মৃতি চিহ্ন না পেয়ে বিপাকে পরেন তারা।
স্থানীয় লোকজন বধ্য ভূমির মাটি কেটে নিয়ে যাওয়ায় ওই স্থানটি গর্তে পরিণত হয়। বাধ্য হয়ে তারা অনুমান করে অন্য একটি জায়গায় আনুষ্ঠানিকতা সারে। পরে প্রশাসনের মাধ্যমে বধ্যভূমি স্মৃতিস্থম্ভ করা হয়।
স্থানীয় জালাল উদ্দিন নিহত মাঝি মনতাজ মিয়ার ছেলে বলেন, আমার বাবাকে খেয়া ঘাটেই গুলি করে হত্যা করা হয়। তখন আমি ছোট। আজো সেই দিনের চিত্র মনে হলে আঁতকে উঠি।
মাঝি সফিকুল ইসলাম বলেন, পানাউল্লারচরের ঘাটে ছিলাম। চোখের সামনে দেখেছি, কীভাবে মানুষগুলোকে গুলি করে ফেলা হচ্ছিল।
ফুল মিয়া, এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, তখনকার ব্রহ্মপুত্র ছিল লাশের স্রোত। চারদিকে শুধু আহাজারি।
আসাদ মিয়া ইব্রাহিমপুরের স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, প্রতিবছর এই দিনটায় মনটা ভারাক্রান্ত হয়ে পড়ে। অনেকেই জানেই না আজকের দিনটি ভৈরবে গণহত্যার দিন।
 সাবেক ডেপুটি কমান্ডার মুক্তিযোদ্ধা তোফাজ্জল হক বলেন, বধ্যভূমি এলাকার ঘটনার বিষয়ে আমি নিজে অবগত আছি। তখন আমরা কয়েকজন উপজেলার তেয়ারির চার এলাকায় ছিলাম। বধ্যভূমির এলাকায় অনেক লোকজনকে হত্যা করা হয়। এছাড়া ভৈরব মেঘনা রেলওয়ে সেতুর নিচেও গানশিপের মাধ্যমে মানুষকে হত্যা করা হয়।
ভৈরবে শহিদ বুদ্ধিজীবি ও ভৈরব মুক্ত দিবস পালন করা হলেও পহেলা দিবসে গণহত্যার বিষয়টি কেউ পালন করে না। আর প্রশাসনিকভাবেও হত্যার সঠিক তালিকা এবং কোন দিবস পালন করে না। আমরা মুক্তিযোদ্ধারা চাই ভৈরবে গণহত্যার দিনটি যেন সরকারিভাবে পালন করা হয়।
শহীদদের স্বজনরা আজো চোখের জল মুছে দাঁড়িয়ে থাকেন অপেক্ষায়—যদি কোনোদিন এই কান্নার ইতিহাস রাষ্ট্রের পাতায় জায়গা পায়।
পহেলা বৈশাখ আজো ভৈরবে আনন্দ নয়, বরং একটি শহরের অসহায় আর্তনাদের দিন। রক্তাক্ত বৈশাখে আজো থেমে নেই কান্না।”

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category


Development: BTMAXHOST