নাজির আহমেদ আল-আমিন
কিশোরগঞ্জের ভৈরবে চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির পক্ষ থেকে থানায় প্রায় দেড় লাখ টাকার আসবাবপত্র প্রদান করা হয়েছে। (২১ আগস্ট) বুধবার সন্ধা ৬টায় থানার মাঠে ভৈরব চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি আলহাজ্ব আব্দুল আল-মামুন ও সহ-সভাপতি জাহিদুর হক জাবেদ থানার ওসি মো. সফিকুল ইসলামের কাছে ১০টি টেবিল ও ৩০টি চেয়ার প্রদান করেন।
জানা যায়, ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে সড়ে আসার পর ওইদিন বিকালে ভৈরব থানা ভাঙচুর করে দুর্বিত্তরা। এ ঘটনার ভৈরব থানা পুলিশ সদস্যরা কোন রকম প্রাণে বেঁচে পালিয়ে যায়। সেনাবাহিনী সদস্যদের সহযোগীতায় অধিকাংশ অস্ত্র ও গুলা বারুদ ক্যাম্পে নিয়ে যায় সেনাবাহিনীর সদস্যরা।
থানায় থাকা কিছু অস্ত্র, জব্দকৃত মোটর সাইকেলসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম লুট করে থানা কার্যালয়সহ তাদের বাসস্থানে আগুন দেয় দূর্বৃত্তরা। এ ঘটনার পরদিন সকাল থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সমর্থনকারীরা মাইকিং করে থানা থেকে লুট হওয়া সরঞ্জামাধী সংগ্রহ শুরু করে।
অপর দিকে ভৈরবের ব্যবসায়ী সমাজ ও বৈষম্যেবিরোধী ছাত্রদের সহযোগীতায় থানা থানা সংস্কার করা হয়। সেই হিসেবে আজ ভৈরব চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির পক্ষ থেকে ৩০টি চেয়ার ও ১০ টেবিল হস্তান্তর করা হয়।
এ বিষয়ে চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির সভপতি আলহাজ্ব আল মামুন জানান, সরকার পতনের পর থানা ভাঙচুর করে দুর্বৃত্তরা। এতে দীর্ঘদিন যাবত ভৈরবের আইন শৃঙ্খলার অবনতি হয়েছে। থানায় কোন কার্যক্রম করার সুযোগ নেই। ভৈরববাসী যেন দ্রুত সেবা পায় সেজন্য ভৈরব চেম্বারের পক্ষ থেকে সহযোগীতা করা হয়েছে।
এ সময় চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির সহ-সভাপতি জাহিদুল হক জাবেদ বলেন, ভৈরবের পরিস্থিতি দিন দিন অবণতি হচ্ছে। ভৈরবে রাত হলেই চুরি ছিনতাই হচ্ছে। আমরা সহযোগীতা করছি যেন দ্রুত পুলিশ প্রশাসন কাজে ফিরতে পারে। থানার কার্যক্রমে গতি ফেরাতেই আমরা সহযোগীতায় এগিয়ে এসেছি। আমরা দ্রুত সময়ের মধ্যে কমিউনিটি পুলিশ চালু করবো। এসময় তিনি থানা পুলিশের পক্ষ থেকে ভৈরবাবসীর সহযোগীতা কামনা করেন।
উপস্থিত বৈষম্যেবিরোধী ছাত্ররা বলেন, দুষ্কৃতিকারী কারিদের হামলা থানার সকল গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ধ্বংস হয়ে গেছে। ভৈরব থানায় কোন রকম দূর্ণীতি ও অনিয়ম হবে না। থানা চত্বরে কোন অন্যায়কারীকে প্রশ্রয় দেয়া হবে না। একটি সুন্দর ভৈরব গড়ে তুলতে সবার পক্ষ থেকে সহযোগীতা করে যাবো।
এ বিষয়ে ভৈরব থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. সফিকুল ইসলাম বলেন, ৫ আগস্ট দুষ্কৃতিকারীরা ভৈরব থানা ভাঙচুর ও লুটপাট করে আগুন দেয়। দীর্ঘদিন থানা কার্যক্রম বন্ধ রাখতে হয়েছে। থানা সংস্কারে ভৈরবের ছাত্রসমাজ ও সুশীল সমাজের নেতৃবৃন্দসহ ব্যবসায়ী সমাজের পক্ষ থেকে সহযোগীতা করছে। আমরা একটি গাড়ি পেয়েছি ভৈরবে কার্যক্রম চালাতে। আরো গাড়ি প্রয়োজন রয়েছে। আমরা মানুষের জানমালের রক্ষার্থে জীবন বাজি রেখে কাজ করে যাবো। এ সময় তিনি কাজের গতি ফেরাতে ভৈরবের সর্বস্তরের মানুষের সহযোগিতা কামনা করেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির সহ সভাপতি জাহিদুল হক জাবেদ, পরিচালক আরাফাত ভূইয়া, মিজানুর রহমান পাটোয়ারী, সৈকত আহমেদ জেমস, তানভির আহমেদ, আরিফ মাহমুদ রুলেক্স, নিজাম উদ্দিন সরকার, হাজি আলাউদ্দিন, সহযোগী পরিচালক আ্বদুর রউফ, আব্দুর রশিদ, মো. আক্তারুজ্জামানসহ বৈষম্য বিরোধী ছাত্র সমাজ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
Leave a Reply