শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ১০:৪১ অপরাহ্ন
ডিসির অনুমতি একস্থানে, ড্রেজার চলে অন্যস্থানে – মেঘনা নদীতে অবাধে বালু উত্তোলন, হুমকিতে অবকাঠামো
-
Update Time :
বৃহস্পতিবার, ১৩ মার্চ, ২০২৫
-
৪৮
Time View
ডিসির অনুমতি একস্থানে, ড্রেজার চলে অন্যস্থানে – মেঘনা নদীতে অবাধে বালু উত্তোলন, হুমকিতে অবকাঠামো
নিজস্ব প্রতিবেদক
একস্থানে ডিসির অনুমতি নিয়ে মেঘনা নদীর অন্যস্থানে গভীর নদীতে নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে চুম্বক ড্রেজারে বাল্কহেড নৌকায় অবাধে বালু উত্তোলন করার অভিযোগ উঠেছে একটি চক্রের বিরুদ্ধে। ফলে হুমকিতে রয়েছে নদীর তীরবর্তী বন্দরনগরী ভৈরব বাজারসহ মেঘনা নদীর উপর নির্মিত একটি সড়ক সেতু, দুটি রেলসেতু, তেলের ডিপো, বিএডিসি গোডাউন ও সরকারি বিভিন্ন স্থাপনা।
মেঘনা নদীর আশুগঞ্জ প্রান্তে ফার্টিলাইজার এলাকায় চর কাটার জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসক কর্তৃক (নব্যসৃষ্টি করা ইজারা) বালুর উত্তোলনের অনুমতি দেয়া নিয়েও জনমনে প্রশ্ন উঠেছে। ডিসির দেয়া বালু উত্তোলনের অনুমতিতে নাকি শুভঙ্করের ফাঁকি রয়েছে।
একটি সূত্র জানিয়েছেন, জায়গার পরিমাপ, ড্রেজারের সংখ্যা নিয়ে জেলা প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্টরা মুখ না খোলায় এবং নানা ফাঁকফুকর থাকায় ইজারাদাররা অতিরিক্ত ড্রেজার ব্যবহার করে বালু উত্তোলন করায় সরকার বিপুল পরিমান রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হবে। আনুমানিক দুই কোটি টাকার ইজারা নিয়ে ১লাখ ঘনফুট বালু উত্তোলনের জন্য ডিসি অনুমতি দিলেও অতিরিক্ত ড্রেজার ব্যবহার করে নিদিষ্ট এরিয়ার বাহিরে নদীর বিভিন্নস্থান থেকে অন্তত পাঁচলাখ ঘনফুট বালু উত্তোলন কারার টার্গেট নেমেছে একটি প্রভাবশালী মহল। তাছাড়া চর কাটার জন্য মুলত কাটিং ড্রেজার ব্যবহার করা হয়। ডেসপাচ জেটির এলাকার নদীর গভীরতা বাড়াতে কাটিং ড্রেজার ব্যবহার না করে লোড ড্রেজার ব্যবহার করলে ভবিৎষতে জেটি এলাকাই ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশংকা রয়েছে। এবিষয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ডিসি মোহাম্মদ দিদারুল আলম প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ না নিয়ে উল্টো সাংবাদিকদের সাথে ক্ষামতার দাপট দেখাচ্ছেন।
অনুসন্ধানে জানাযায়, আশুগঞ্জ ফার্টিলাইজার এন্ড কেমিক্যাল কোম্পানি লিমিটেড কর্তৃপক্ষ তাদের কারখানার ওয়াটার ইনটেক ও ডেসপাচ জেটি এলাকায় বালুর সামান্য চর জাগায় ডেসপাচ জেটিতে পণ্যবাহী জাহাজ ভীরতে সমস্যা হওয়ায় ওই জায়গাটুকরু গভীরতা বাড়াতে বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে ব্রাহ্মনবাড়িয়া জেলা প্রশাসক বরাবর আবেদন করেন। ওই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ২০২৪ সালের ১৭ এপ্রিল, ব্রাহ্মনবাড়িয়া জেলা বালুমহাল ব্যবস্থাপনা কমিটির বিশেষ সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওইসভায় গৃহীত সিদ্ধান্তে আশুগঞ্জ ফার্টিলাইজার এন্ড কেমিক্যাল কোম্পানি লিমিটেড কর্তৃপক্ষ তাদের কারখানার ওয়াটার ইনটেক ও ডেসপাচ জেটি এলাকায় মেঘনা নদীতে বিআইডব্লিউএ কর্তৃক হাইড্রোগ্রাফিক জরিপ (অপসন-১) অনুযায়ী ৯৪,৮০,৩১৫ (চুরান্নব্বই লক্ষ আশি হাজার তিনশত পনের) ঘনফুট মাটি/বালু উত্তোলনের অনুমোদন দেন মেসার্স কামাল ইন্টারন্যাশনাল নামে একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে। চলতি বছরের ১৯ জানুয়ারি ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেভিনিউ ডেপুটি কালেক্টর নুসরাত জাবীন স্বাক্ষরিত আদেশে বালু উত্তোলনের সরকারি মুল্য বাবদ ধরা হয় ১,৯৯,০৮,৬৬২/- (এক কোটি নিরানব্বই লক্ষ আটহাজার ছয়শত বাষট্রি) টাকা। ১৫ পর্সেন্ট ভ্যাট ও ১০পর্সেন্ট আয়করসহ মোট ২,৪৮,৮৫,৮২৯/- (দুই কোটি আটচল্লিশ লক্ষ পঁচাশি হাজার আটশত উনত্রিশ) টাকা ৭ কর্মদিবসের মধ্যে পরিশোধপূর্বক ৩০০/- (তিনশত) টাকার নন জুডিশিয়াল ষ্ট্যাম্পে চুক্তির নির্দেশ দেন।
বালু উত্তোলনের অনুমোদনটি মুলত কোন স্থানে দেয়া হয়েছে, সার কারখানার ডেসপাচ জেটির কতটুকু অংশ কাটা হবে তার পরিমাপ এবং বালু উত্তোলনের জন্য কাটিং ড্রেজার নাকি শুধুমাত্র চুম্বক ড্রেজারের অনুমোদন দেয়াসহ এ সংক্রান্ত বিষয়ে জানতে বিআইব্লিউটিএ’র আশুগঞ্জ-ভৈরব বাজার নদীবন্দরের উপ-পরিচালক, নৌ পুলিশ কিশোরগঞ্জ অঞ্চলের পুলিশ সুপার, আশুগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে মেঘনা নদীর সারকারখানা এলাকায় বালু উত্তোলনের জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া ডিসির অনুমতির একটি অস্পষ্ট চিঠি পেয়েছে বলে জানান। সড়ক ও জনপদ বিভাগের ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে মেঘনা নদী থেকে বালু যাবে এধরণের কজ দেখানো হয়েছে। ফলে ডিসির বাইরে কেই কথা বলতে চাচ্ছে না। কতটুকু এরিয়ায় বালু কাটা হবে। কাটিং ড্রেজার নাকি শুধুমাত্র চম্বুক ড্রেজারের বালু কাটার অনুমতি দিয়েছে ডিসি তার কোন কিছুই জানেন না তারা। অতএব সবকিছুই যেন ডিসির নিয়ন্ত্রণে। ডেসপাচ জেটির চর কাটার জন্য কি ধরণের শর্ত দেয়া হয়েছে ঠিকাদার ও ডিসির বাইরে কেউ অবগত না। ফলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ডিসি মোহাম্মদ দিদারুল আলমের স্বচ্ছতা ও নৈতিকতা নিয়ে প্রশ্ন দেখো দিয়েছে।
হাইড্রোগ্রাফিক সার্ভের মাধ্যমে ডেসপাচ জেটি এলাকায় চর কাটার অনুমোদনের কথা বলা হলেও যথাযথ পক্রিয়া অনুসরণ করে ডিসি বালু উত্তোলনের অনুমোদন দিয়েছে কিনা তা নতুন করে তদন্তকরে জনসাধারণকে অবগত করার দাবি অভিজ্ঞ মহলের। ডেসপাচ জেটি এলাকায় মাটির অনুমতি নিয়ে ১০-১৫টি লোড ড্রেজার মেঘনা নদীর গভীরে ভৈরবপ্রান্তে এসে বালু উত্তোলন করায় হুমকির মুখে পড়েছে বন্দরনগর ভৈরব বাজার, ভৈরব আশুগঞ্জ মেঘনা নদীর উপর নির্মিত সৈয়দ নজরুল ইসলাম সড়ক সেতু, হাবিলদার আবদুল আলিম রেলওসতু, জিল্লুর রহমান রেলসেতু, দুটি তেলের ডিপো ও বিএডিসির দুটি সারের গুদাম।
মেঘনা নদীতে অবাধে লোড ড্রেজারে বালু উত্তোলনের ফলে চলতি বছরের ২৮ জানুয়ারি গভীর রাতে হঠাৎ মেঘনা নদীর ভৈরব বন্দর এলাকায় প্রবল নদী ভাঙনে প্রায় ২০০ ফুট মিটার জায়গা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। এছাড়াও ২০২৪ সালের ৮ সেপ্টেম্বর রাতে রেলসেতু সংলগ্ন তেলের ডিপোঘাট এলাকায় নদী ভাঙনের ফলে ১৮০ মিটার ভূমিসহ প্রায় ২০টি কাঁচা ঘর ও যমুনা অয়েল কোম্পানির একাংশ নদীতে তলিয়ে যায়। এর আগে ২০২২ সালে কাছাকাছি এলাকায় দুটি রাইস মিল নদীগর্ভে বিলীন হয়। এবং এই ঘটনায় দুইজন শ্রমিক প্রাণ হারান।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়,ভৈরব বাজার কাঠপট্টি এলাকার কয়েকশ মিটারদূরে মেঘনার মাঝনদীতে ১০-১৫টি লোডিং ড্রেজারে বাল্কহেড নৌকায় বালু উত্তোলন করছে। সংবাদকর্মীদের দেখে বালু উত্তোলন বন্ধ করে ড্রেজার গুলো স্থানত্যাগ কওে আশুগঞ্জ সারকারখানা এলাকায় চলে য়ায়। তাদের সবার মুখে একটিই কথা, ডিসির অনুমতি নিয়ে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে।
এবিষয়ে জানতে অনেক চেষ্টা করেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স কামাল ইন্টারন্যাশনালের সত্তাধিকারি মো: কামাল হোসেনের সাথে যোগাযোগ করা যায়নি। তবে জেলা প্রশাসকের সাথে কথা বলা পরই আলহাজ মামনু নামে একজন রাজনৈতিক নেতা ফোন করে জানতে চান ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ডিসিকে ফোন দেয়া হয়েছে কিনা বালুর বিষয়ে। এই বালু উত্তোলনের কাজটি তার বলে দাবি করেন। এ কাজটি কামাল হোসেন কাজ পেয়েছে বলা হলে তিনি তখন বলেন কামালই তিনি।
নৌ পুলিশ কিশোরগঞ্জ অঞ্চলের এসপি মোহাম্মদ আহাদুজ্জামান মিয়া বলেন, ব্যক্তিগতভাবে একটি চিঠি দিয়ে গেছে আমাকে। ডিসি সাহেবের অনুমোদন নিয়ে নাকি বালু কাটা হচ্ছে। কতগুলো ড্রেজারে মাটি কাটবে ওই কাগজ দেয়নি। শুধু অনুমোদন পত্রটি দিয়েছে। এবিষয়ে তিনি বলেন, কিভাবে এখানে বালু কাটার অনুমতি নিয়েছে ফার্টিলাইজার কর্তৃপক্ষের কাছে ব্যাখ্যা চান। আর যদি অভিযোগ পাই নির্ধারিত এরিয়ার বাইরে অবৈধভাবে কেউ বালু কাটছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবো।
এবিষয়ে আশুগঞ্জ ফার্টিলাইজার এন্ড কেমিক্যাল কোম্পানি লিমিটেড কর্তৃপক্ষের সাথে চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা যায়নি।
এ বিষয়ে বিআইব্লিউটিএ’র আশুগঞ্জ-ভৈরব বাজার নদীবন্দরের উপ-পরিচালক মো. মহিউদ্দিন খান বলেন, মেঘনা নদীর আশুগঞ্জ ফার্টিলাইজার এলাকায় একটি চর জাগায় একটি পার্টিকে ড্রেজিংয়ের অনুমোদনের অনুমোদন দিয়েছে ডিসি সাহেব। তাদের স্থানও বুঝিয়ে দিয়েছে। অনুমতিতে ফার্টিলাইজারের সমস্যা দেখানো হয়েছে, সিক্স লেন সড়কে বালি যাবে আরো কঠিন কিছু কজ দেখানো হয়েছে। তাদের ইর্মাজেন্সি কাজে তো হস্তক্ষেপ করতে পারিনা। এগুলো দেখাইয়া ডিসি সাহেব অনুমতি দিয়েছেন। এবিষয়ে কোন মন্তব্য করতে পারবোনা। আমাদের এখান থেকে কোনো কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়নি। হাইড্রোগ্রাফিক সার্ভে করা হয়েছে কিনা এ বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না। তাছাড়া কতটুকু এরিয়ায় এবং কতটি ড্রেজারে বালু উত্তোলন করার অনুমতি আছে এ বিষয়ে ইউএনও সাহেব ও এসিল্যান্ড সাহেব ভালো বলতে পারবে। আমরা শোনা শোনা যতটুকু শুনি ততটুকু বলতে পারবো। চিঠির মধ্যে কি লিখা আছে জানতে চাইলে তিনি জানান, অষ্পষ্ট একটি কপি মোবাইলে একজন দেখাইছে। কি লেখা তা বুঝা যাচ্ছেনা তেমন। দুই কোটি টাকার ডাক পেয়েছে জেনেছি। এসময় বালু উত্তোলনের বিষয়ে তাদের করনীয় আছে কিনা জানতে চাইলে বলনে, আমাদের অবশ্যই করনীয় আছে তবে ডিসি সাহেব যখন বিশেষ পরিস্থিতির উপর ভিত্তি করে অনুমোদন দিয়েছে, সেখানে আমরা কি করবো। উনারা করতেছে আমরা দেখতেছি। কোন প্রতিষ্ঠান কাজটি পেয়েছে সেটিও অবগন নন তিনি।
আশুগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শ্যামল চন্দ্র বসাক বলেন, আমি বিস্তারিত জানিনা। এটা হচ্ছে ডিসি অফিস থেকে ইজারা দিয়েছে। এখনো আমি ডুকোমেন্টটি পায়নি। ডুকোমেন্টটি আমার কালেক্ট করে নিতে হবে। এ বিষয়টি ডিসি অফিসের এডিসি রেভিনিউ সেকশন দেখে। রিভিনিউ স্যারের সাথে কথা বললে বিস্তারিত জানতে পারবেন। তিনি বলেন, এটা কোন বালু মহাল ডাক দেয়া হয়নি। ফার্টিলাইজার কর্তৃপক্ষের আবেদনের প্রেক্ষিতে অনুমোদন দেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, নিয়মের বাহিরে গিয়ে কউে যদি কোন কিছু করে তাহলে ডিসি অফিসের সাথে যোগযোগ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। নিদিষ্ট এরিয়ার বাহিরে বালু উত্তোলনের কোন সুযোগ নাই।
এ বিষয়ে জানতে ফোন দেয়া হয় ব্রাহ্মণবাড়িয়া অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) জেসমিন সুলতানাকে তিনি বালু কাটার বিষয়ে তেমন কিছুই জাননেনা। ফাইল দেখে বলতে হবে বললেন তিনি। কথামত আধঘন্টা পর ফোন দেয়া হয় এডিসি জেসমিন সুলতানাকে। একাধিকবার ফোন করলেও তিনি কল রিসিভ করার প্রয়োজন মনে করেননি। পরদিন ১১মার্চও একাধিকবার ফোন দেয়া হয় এডিসি জেসমিন সুলতানাকে তখনও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। পরে জেলা প্রশাসককে ফোন করা হয়। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ দিদারুল আলমও তার জেলার বালুর বিষয়ে ভৈরবের সাংবাদিককের কাছে জাবাব দিবেনা বলে জানান এবং লোকাল সাংবাদিক বলে তিরস্কার করেন এবং তার জেলার বিষয় তিনি বুঝবেন বলে জানান। ডিসির ফোনের কিছক্ষণ পর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) জেসমিন সুলতানা হোয়াটঅ্যাপ নাম্বারে ফোন করে ওই সাংবাদিককে হুমকিমুলক কথা বলেন ভৈরবের সাংবাদিক হয়ে কেন ডিসিকে ফোন দেয়া হয়েছে আক্রমনাক্ত আচরণ বুঝতে পেরে অন্যমোবাইল ফোনে হোয়াটঅ্যাপে কথা বলার শেষের ৩মিনিটের একটি ভয়েজ রেকর্ড করা হয়।
এবিষয়য়ে মুঠোফোনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ দিদারুল আলমের কাছে জানতে চাইলে, বালু কাটার বিষয়ে ভৈরবের সাংবাদিকদের কাছে জবাব দিবেননা এবং লোকাল পত্রিকার সাংবাদিক বলে তিরস্কার মুলক কথা বলেন। তিনি শুরুতেই বলেন, ভৈরবের সাংবাদিকদের ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় কি কাজ। তখন আশুগঞ্জ সারকারখানা মেঘনা নদীতে ড্রজারে বালু উত্তোলন বিষয়ে হাইড্রোগ্রাফিক সার্ভে করা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে বলেন, আশুগঞ্জের বিষয়ে ভৈরবের সাংবাদিকদের আমি কেন বলবো। আমাদের এখানে কি সাংবাদিক নাই। আপনাদের পত্রিকার কি এজেন্ট নাই আমাদের এলাকায়। আমার এলাকার সাংবাদিক আমার সাথে কথা বলবে। তখন তাকে বলা হয়, আপনি যদি আশুগঞ্জের অনুমতি দেন ড্রেজারে বালু উত্তোলনের তাহলে ভৈরবপ্রান্তে কেন বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। ডিসি তখন বলেন, ভৈরবের সমস্যা নিয়ে ভৈরব কথা বলেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিষয় নিয়ে কেন ডিসির সাথে কথা বলছেন। ভৈরবের পত্রিকায় তোলেন। আমার জেলার বিষয়টি আমরা দেখতেছি। আপানার জেলা বিষয় হলে আপনার জেলা প্রশাসকের সাথে কথা বলবেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা প্রশাসকের সাথে কেন কথা বলছেন। আমি তো আপনার কাছে জবাবদিহি করবো না। তখন তিনি রেগে গিয়ে বলেন, আপনি ভুলে যাচ্ছেন একজন ডিসির সাথে কথা বলছেন ভৈরবের একজন লোকাল পত্রিকার সাংবাদিক হয়ে। আপনার জেলা নিয়ে আমি বুঝবো কি করবো।
জেলা প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট কেউই মেঘনা নদীতে বালুর বিষয়ে মুখ না খোলায়, বালু উত্তোলনের অনুমতি যথাযথ নিয়ম মেনে অনুমোদন দেয়া হয়েছে কিনা প্রশ্ন জেলা বালু ব্যবস্থা কমিটির বিরুদ্ধে।
অভিযোগ রয়েছে, আশুগঞ্জ ফার্টিলাইজার এন্ড কেমিক্যাল কোম্পানি লিমিটেডের ওয়াটার ইনটেক ও ডেসপাচ জেটি এলাকায় চর ড্রেজিংয়ের অনুমতি নিয়ে গত একমাস ধরে অনুমতিত চর ড্রেজিং না করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসনকে ম্যানেজ করে মেঘনা নদীর গভীর থেকে দিন ও রাতে ১০-১৫টি চুম্বক/লোড ড্রেজারের মাধ্যমে বালু উত্তোলন করলেও জেলা ও উপজেলা প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট সরকারি প্রতিষ্ঠান গুলো রয়েছে নিরব। মেঘনা নদীর আশুগঞ্জ ও ভৈরবে নির্মিত সরকারের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাসহ বড় ধরণের নদী ভাঙ্গনের কবল থেকে নিরাপদ থাকতে মেঘনায় বালু উত্তোলন বন্ধসহ ডিসির দেয়া অনুমতি কতটুকু নিয়ম মেনে দেয়া হয়েছে অন্তবর্তীকালীন সরকার প্রধানসহ সংম্লিষ্ট বিভাগ ও সরকারের বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা বিষয়টি খতিয়ে দেখে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেয়ার দাবি সুধীসমাজসহ সাধারণ মানুষের।
Please Share This Post in Your Social Media
More News Of This Category
Development: BTMAXHOST
Leave a Reply