মো: নাঈমুজ্জামান নাঈম
কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচরে ব্যবসায়ী উবায়দুল হক পাইলট হত্যা মামলার প্রধান আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ২ মার্চ (রোববার) এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কুলিয়ারচর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. হেলাল উদ্দিন পিপিএম।
গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তি হলেন কুলিয়ারচর উপজেলার বাজরা মাছিমপুর শেখ বাড়ির মৃত লাল মিয়ার ছেলে মো. শাহাদাত হোসেন (৩২)।
ওসি হেলাল উদ্দিন জানান, ক্লোলেস এই মামলায় তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় তদন্ত চালিয়ে ২৮ ফেব্রুয়ারি (শুক্রবার) শাহাদাত হোসেনকে তার নিজ বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরদিন ১ মার্চ তিনি আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন, যেখানে হত্যাকাণ্ডে তার সঙ্গে আরও তিনজন সহযোগীর থাকার কথা স্বীকার করেন।
ব্যবসায়িক লেনদেন থেকে হত্যাকাণ্ড
ওসি আরও জানান, নিহত উবায়দুল হক পাইলট চাল, কুড়া ও ভূষি ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। সেই সূত্রে শাহাদাত হোসেনের সঙ্গে তার ব্যবসায়িক সম্পর্ক গড়ে ওঠে। প্রথমদিকে শাহাদাত বাকিতে পণ্য নিতেন, পরে তাদের সম্পর্কের ঘনিষ্ঠতা বাড়লে উবায়দুল তাকে ৫০ হাজার টাকা দিয়ে একটি গরু কিনতে সহায়তা করেন। কিন্তু দেনাগ্রস্ত শাহাদাত গরুটি গোপনে বিক্রি করে দেন।
উবায়দুল বিষয়টি জানতে পেরে টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য চাপ দিলে, হত্যার একদিন আগে শাহাদাত ৫০ হাজার টাকা দোকানে দিয়ে আসেন। তবে এরপরও পরিকল্পিতভাবে তিনি আরও ৩-৪ জন সহযোগী নিয়ে উবায়দুলের কাছে থাকা ব্যবসার টাকা ছিনতাইয়ের পরিকল্পনা করেন। ছিনতাইয়ের সময় উবায়দুল শাহাদাতকে চিনে ফেলায়, তারা ঘটনাস্থলেই তাকে গলা কেটে হত্যা করে।
প্রযুক্তির সহায়তায় গ্রেপ্তার
ওসি জানান, হত্যাকাণ্ডটি ক্লোলেস ছিল। তবে বিভিন্ন সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে শাহাদাত হোসেনকে শনাক্ত করা হয়। তাকে গ্রেপ্তারের পর হত্যাকাণ্ডের মূল কারণ ও পরিকল্পনার বিষয়টি জানা যায়। এ ঘটনায় জড়িত অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান চলছে।
মামলার পটভূমি
প্রসঙ্গত, গত ১৯ ফেব্রুয়ারি (বুধবার) রাতে প্রতিদিনের মতো দোকান বন্ধ করে মোটরসাইকেলে করে বাড়ি ফিরছিলেন উবায়দুল হক পাইলট। বাড়ির কাছাকাছি পশ্চিম তাড়াকান্দি এলাকায় পৌঁছালে দুর্বৃত্তরা তাকে গলা কেটে হত্যা করে। পরদিন (২০ ফেব্রুয়ারি) নিহতের মা আঙ্গুরা বেগম বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
Leave a Reply