ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন, বকেয়া বিল ৪০ লাখ টাকা: দুর্ভোগে শতাধিক রোগী
আফসার হোসেন তূর্জা
কিশোরগঞ্জের ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ৪০ লাখ টাকা বিদ্যুৎ বিল বকেয়া থাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয় বিদ্যুৎ বিভাগ। এতে হাসপাতালটি বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়ায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন রোগী ও তাদের স্বজনরা। বিশেষ করে হাসপাতালে ভর্তি রোগী ও চিকিৎসকরা চরম দুর্ভোগে পড়েন। এছাড়াও পানি সরবরাহ ও পরিক্ষা নিরিক্ষাসহ স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যহত হয়ে পড়ে। মঙ্গলবার (২৪ জুন) সকাল ৯ টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এতে জনমনে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
স্থানীয় বিদ্যুৎ বিভাগ জানায়, ভৈরব বিদ্যুৎ বিক্রয় ও বিতরণ কেন্দ্রের আওতায় ১০০ শয্যা বিশিষ্ট ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হচ্ছিল। এছাড়াও হাসপতালটির আওতায়ধীন বিশেষায়িত ট্রমা সেন্টারেও বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়। কিন্তু দীর্ঘদিন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বিল পরিশোধ না করায় ৪০ লাখ টাকা বকেয়া পড়ে। ফলে দফায় দফায় বকেয়া বিল পরিশোধে নোটিশ দেয় বিদ্যুত অফিস। অবশেষে ২৪ জুন সকাল ৯টার দিকে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়া হয়। পরে বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ জানলে বিদ্যুৎ বিল পরিশোধের আশ্বাস দিলে ৪ ঘন্টার পর বিদ্যুৎ সংযোগ ফিরে দেয়া হয়।
হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা ভর্তি রোগীরা বলেন, সকাল থেকে হাসপাতালে বিদ্যুৎ নাই। হাসপাতালে এসেছি চিকিৎসা নিতে কিন্তু এখন তো আরও বেশি অসুস্থ হয়ে পড়ছি। ৪-৫ ঘণ্টা যাবত বিদ্যুৎ ছাড়া আমরা বেডে পড়ে আছি।
ভৈরব বিদ্যুৎ বিক্রি ও বিতরণ কেন্দ্রের সহকারি প্রকৌশলী মো. শামসুল আলম বলেন, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে দফায় দফায় বকেয়া বিল প্রদানের নোটিশ দেওয়া হলেও তারা বিল পরিশোধ করছে না। সেজন্যই আজ সকালে হাসপাতালের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। পরবর্তীতে স্বাস্থ্য বিভাগের ডিজি মহোদয়ের বিল প্রদানের আশ্বাসে পুনরায় বিদ্যুৎ সংযোগ প্রদান করা হয়েছে।
ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার, ডা. মো. আব্দুল করিম বলেন, কোনো ধরনের নোটিশ ছাড়াই সকাল ৯টায় বিল বকেয়া থাকায় হাসপাতালে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করে দেয় বিদ্যুৎ বিভাগ। যার ফলে ভোগান্তিতে পড়েন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন শতাধিক রোগী। ৪ ঘণ্টা হাসপাতালে বিদ্যুৎ সংযোগ না থাকায় হাসপাতালের সব কার্যক্রম ব্যাহত হয়েছে।হাসপাতালটি ১০০ শয্যার হলেও বরাদ্দ আসে ৫০ শয্যার। কিন্তু বিদ্যুৎ বিল আসে ১০০ শয্যার। ফলে আর্থিক সংকট দেখা দেয়। এ কারণে বিদ্যুৎ বিল বকেয়া পড়েছে। পর্যাপ্ত বরাদ্দ না থাকায় বিদ্যুতের বিল দেওয়া যাচ্ছে না। আজকে হাসপাতালে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্নের বিষয়টি ডিজি মহোদয়কে অবগত করা হলে তিনি বিদ্যুৎ বিভাগের সঙ্গে কথা বলে পুনরায় সংযোগ দেওয়ার ব্যবস্থা করেন।
Leave a Reply