ভৈরবে স্ত্রীর কান্না: “স্বামী পরকীয়া করে, মারধর করে, ঘর থেকে বের করেছে”
নিজস্ব প্রতিবেদক
স্বামীর পরকীয়া, যৌতুকের চাপ ও পৈশাচিক নির্যাতনের শিকার হয়ে সন্তানদের নিয়ে চরম নিরাপত্তাহীনতায় দিন কাটাচ্ছেন শিরিনা বেগম নামে এক নারী। মঙ্গলবার দুপুরে ভৈরবের দুর্জয় মোড় এলাকায় আমেনা ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে চোখের পানি ধরে রাখতে না পেরে তিনি বলেন, আমি চাইনি সংসার ভাঙুক, কিন্তু এখন আমার সন্তানদের জীবনও হুমকির মুখে।
জানা গেছে, ভৈরব পৌর এলাকার জগন্নাথপুর দক্ষিণ পাড়ার বাসিন্দা মোছা. শিরিনা বেগমের সঙ্গে ২০০২ সালে একই এলাকার মো. কবির হোসেনের (৪৬) বিয়ে হয়। দীর্ঘ ২২ বছরের দাম্পত্য জীবনে তাদের চার সন্তান রয়েছে। কিন্তু সম্পর্কের শুরু থেকেই শিরিনা শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হয়ে আসছেন বলে দাবি করেন। তারা একই এলাকার মো. হেলাল উদ্দিনের মেয়ে শিরিনা ও মো. সিরাজ উদ্দিনের ছেলে মো. কবির হোসেন।
সংবাদ সম্মেলনে শিরিনা জানান, বিয়ের কয়েক বছর পর তার স্বামী বিদেশ যাওয়ার অজুহাতে ৪ লক্ষ টাকা যৌতুক দাবি করেন। তিনি তা দিতে অপারগ হলে নির্যাতনের মাত্রা বাড়তে থাকে। একপর্যায়ে তাকে সন্তানসহ বাবার বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। এ ঘটনায় আদালতে দুটি মামলা দায়ের করলে তার স্বামী তিন মাসের সাজাও ভোগ করেন।
কান্নাজড়ানো কণ্ঠে শিরিনা বলেন, “আমি আদালতের রায় পাওয়ার পরও সন্তানদের ভবিষ্যতের কথা ভেবে তাকে মাফ করে ঘরে ফিরিয়ে এনেছিলাম। কিন্তু সে তার আচরণে বিন্দুমাত্র পরিবর্তন আনেনি।”
তিনি আরও অভিযোগ করেন, চলতি বছরের ২৬ মে গোপনে দ্বিতীয় বিয়ে করেন কবির হোসেন। ওই বিয়েতে ব্যবহার করা হয় তাদের বড় ছেলের পাঠানো ৫০ হাজার টাকা। শুধু তাই নয়, ছেলের পাঠানো আরও প্রায় ১৫ লক্ষ টাকা দিয়ে কবির নিজের নামে একটি বাড়িও নির্মাণ করেছেন। অথচ এখন শিরিনা ও তার সন্তানদের সেই বাড়িতে ঢুকতেও দেওয়া হচ্ছে না।
“আমার ছেলেমেয়েকে হত্যার হুমকি দিচ্ছে সে। আমি কোথাও আশ্রয় পাচ্ছি না,”—এভাবেই নিজ অসহায় অবস্থার বর্ণনা দেন শিরিনা বেগম।
তিনি প্রশাসনের প্রতি আকুল আবেদন জানান, “আমি আরেকবার ঘরে ফিরতে চাই। সন্তানদের নিয়ে স্বাভাবিকভাবে বাঁচতে চাই। কিন্তু এখন নিজের বাড়িতেই নিরাপদ নই।”
Leave a Reply