1. admin@drisshopat-news.com : admin :
মঙ্গলবার, ০৮ এপ্রিল ২০২৫, ০৮:২২ অপরাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ
ইউনিসেফের তথ্যে এখনো বন্যায় ঝুঁকিতে ২০ লাখ শিশু ক্যারাম খেলা নিয়ে দুই গ্রামবাসীর সংঘর্ষ, আহত ২০ ভৈরব থেকে ২১১ কেজি গাঁজাসহ দুই মাদককারবারি আটক  ভৈরবে চলন্ত ট্রেন থেকে পড়ে বেসরকারি কর্মচারীর মর্মান্তিক মৃত্যু ছোট দুই ভাইয়ের ঝগড়া থামাতে গিয়ে বড় ভাই নিহত ইতালির স্বপ্নভঙ্গ, সাত মাসের বন্দিদশা, দালালের অত্যাচারে শেষ সোহাগের জীবন ভৈরবে ঘুষ নিয়ে অটোচালক দম্পতির নামে মাদকের মিথ্যা মামলা: এসআই আল মামুন ক্লোজড ভৈরবে এক ভাইয়ের ঘরে মাদক উদ্ধার, মামলা অন্য ভাইকে দেওয়ার অভিযোগ দুই পুলিশের বিরুদ্ধে  ভৈরবে র‍্যাবের অভিযানে তিন মাদক কারবারি গ্রেফতার ভৈরব লঞ্চঘাটে তিন বন্ধুসহ এক ব্যবসায়ীর ৭২ হাজার টাকা ছিনতাই  ভৈরবে ছয় বছরের শিশুকে হাত-পা বেঁধে বলাৎকারের অভিযোগ, আটক ১
শিরোনাম
ইউনিসেফের তথ্যে এখনো বন্যায় ঝুঁকিতে ২০ লাখ শিশু ক্যারাম খেলা নিয়ে দুই গ্রামবাসীর সংঘর্ষ, আহত ২০ ভৈরব থেকে ২১১ কেজি গাঁজাসহ দুই মাদককারবারি আটক  ভৈরবে চলন্ত ট্রেন থেকে পড়ে বেসরকারি কর্মচারীর মর্মান্তিক মৃত্যু ছোট দুই ভাইয়ের ঝগড়া থামাতে গিয়ে বড় ভাই নিহত ইতালির স্বপ্নভঙ্গ, সাত মাসের বন্দিদশা, দালালের অত্যাচারে শেষ সোহাগের জীবন ভৈরবে ঘুষ নিয়ে অটোচালক দম্পতির নামে মাদকের মিথ্যা মামলা: এসআই আল মামুন ক্লোজড ভৈরবে এক ভাইয়ের ঘরে মাদক উদ্ধার, মামলা অন্য ভাইকে দেওয়ার অভিযোগ দুই পুলিশের বিরুদ্ধে  ভৈরবে র‍্যাবের অভিযানে তিন মাদক কারবারি গ্রেফতার ভৈরব লঞ্চঘাটে তিন বন্ধুসহ এক ব্যবসায়ীর ৭২ হাজার টাকা ছিনতাই  ভৈরবে ছয় বছরের শিশুকে হাত-পা বেঁধে বলাৎকারের অভিযোগ, আটক ১

ইতালির স্বপ্নভঙ্গ, সাত মাসের বন্দিদশা, দালালের অত্যাচারে শেষ সোহাগের জীবন

  • Update Time : শনিবার, ৫ এপ্রিল, ২০২৫
  • ৬ Time View

ইতালির স্বপ্নভঙ্গ, সাত মাসের বন্দিদশা, দালালের অত্যাচারে শেষ সোহাগের জীবন

 

 

নিজস্ব প্রতিবেদক

বিদেশে নতুন জীবনের স্বপ্ন দেখতে গিয়ে লিবিয়ায় নির্মম মৃত্যুর শিকার হলেন কিশোরগঞ্জের ভৈরবের সোহাগ মিয়া (২৮)। দালাল চক্রের অমানবিক নির্যাতনের শিকার হয়ে চিকিৎসার অভাবে তিনি মারা যান। রবিবার (৩০ মার্চ) বাংলাদেশ সময় সকাল ৭টায় তার মৃত্যুর খবর পায় পরিবার। খবরটি পেয়ে স্ত্রী, তিন মাসের শিশু কন্যা ও স্বজনদের আহাজারিতে এলাকার বাতাস ভারী হয়ে ওঠে। চারদিকে শুধু কান্নার রোল, মায়ের বুকফাটা আহাজারিতে ভারী হয়ে ওঠে কালিপুর দক্ষিণ পাড়া।

ইতালির স্বপ্ন, লিবিয়ায় মৃত্যুর ফাঁদ

পরিবার সূত্রে জানা যায়, সোহাগ তিন ভাইয়ের মধ্যে দ্বিতীয়। আট বছর কাতারে কাটিয়ে দেশে ফিরে এক বছর আগে বিয়ে করেন তিনি। এরপর জীবনের নতুন সম্ভাবনার আশায় ইতালির উদ্দেশ্যে রওনা দেন। দালাল নরসিংদীর বেলাবো উপজেলার বারৈচা এলাকার সেন্টু মিয়ার মাধ্যমে ১৬ লাখ টাকায় ইতালি যাওয়ার চুক্তি করেন। দালালরা প্রতিশ্রুতি দেয় এক মাসের মধ্যে তাকে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইতালিতে পৌঁছে দেবে। কিন্তু বাস্তবে সেটি রূপ নেয় বিভীষিকায়।

সাত মাস ধরে লিবিয়ায় আটকে রেখে তার ওপর চলে নির্মম নির্যাতন। না খেতে দিয়ে, শারীরিকভাবে নির্যাতন চালিয়ে দালালরা বারবার আরও টাকা দাবি করে। এক সপ্তাহ আগে অসুস্থ হয়ে পড়লেও তাকে কোনো চিকিৎসা দেওয়া হয়নি। শেষ মুহূর্তে বাংলাদেশ সময় রাত ২টায় তাকে লিবিয়ার এক হাসপাতালে নেওয়া হলেও চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

দালালদের নৃশংসতা ও প্রতারণার চক্র

প্রতারণার ফাঁদে ফেলে হাজারো তরুণের স্বপ্ন ভেঙে দিচ্ছে মানবপাচারকারী দালাল চক্র। একবার ফাঁদে পড়লে মুক্তি পাওয়া কঠিন হয়ে যায়। সোহাগ মিয়ার মতো অসংখ্য যুবক প্রতিনিয়ত এই দালালদের কারণে প্রাণ হারাচ্ছে। লিবিয়ায় আটকে পড়া অনেক বাংলাদেশি জীবন বাঁচানোর আকুতি জানাচ্ছে, কিন্তু দালালদের লোভী চক্র তাদের মুক্তি দেয় না। পরিবারগুলো সর্বস্ব হারিয়ে প্রিয়জনের লাশ ফিরে পাওয়ার জন্য আকুতি জানাচ্ছে।

একজন স্থানীয় বাসিন্দা ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, “এই দালাল চক্রকে যদি এখনই থামানো না হয়, তাহলে আরও কত ছেলেকে লাশ হয়ে ফিরতে হবে! তারা গরিব মানুষের স্বপ্ন নিয়ে খেলে, তাদের সর্বস্ব লুটে নেয়। আমরা এদের কঠোর শাস্তি চাই।”

স্বজনদের আহাজারি: “আমার স্বামীকে ফিরিয়ে দিন”

নিহতের বড় ভাই সুজন মিয়া বলেন, “আমার ভাই কাতারে ভালো অবস্থানে ছিল। এক বছর আগে দেশে ফিরে বিয়ে করেছিল। তার স্ত্রী ও তিন মাসের কন্যাসন্তান রয়েছে। ইতালিতে পাঠানোর প্রতিশ্রুতি দিয়ে দালালরা ১৬ লাখ টাকা নেয়। কিন্তু সাত মাস ধরে তাকে আটকে রেখে নির্যাতন করেছে। চিকিৎসার অভাবে আমার ভাই আজ আর আমাদের মাঝে নেই।”

সোহাগের স্ত্রী লিজা বেগম বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন। কাঁদতে কাঁদতে বলেন, “দালালের অবহেলায় আমার স্বামী মারা গেছে। আমার সন্তানের ভবিষ্যৎ এখন কী হবে? আমি কী করে ওকে বড় করবো? আমি আমার স্বামীর লাশ চাই, দালালদের বিচার চাই।”

সোহাগের মা শোকে পাথর হয়ে গেছেন। তিনি বলেন, “আমার বুকের ধনকে মেরে ফেলল, আমি আর বাঁচবো না। আল্লাহ, তুমি বিচার করো! আমার ছেলেটা কত স্বপ্ন নিয়ে গেল, কত কষ্ট করলো, আর আজ ওর লাশ আসবে? আমি শুধু আমার ছেলেকে শেষবারের মতো দেখতে চাই।”

নিহতের প্রতিবেশী বৃদ্ধ আবদুল মালেক চোখের পানি মুছতে মুছতে বলেন, “এই দালাল চক্রকে দ্রুত গ্রেপ্তার করতে হবে। প্রতিদিন আমাদের দেশের কত ছেলেকে এভাবে বিদেশে মেরে ফেলা হচ্ছে। সরকারের কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।”

পরিবারের শেষ আশা: মরদেহ দেশে ফেরানো ও বিচার

শোকাহত পরিবার একটাই দাবি জানাচ্ছে—তাদের সন্তানের মরদেহ যেন দ্রুত দেশে ফিরিয়ে আনা হয় এবং দালালদের দ্রুত আইনের আওতায় এনে কঠোর শাস্তি দেওয়া হয়।

ভৈরব উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) শবনম শারমিন বলেন, “সরকারি প্রক্রিয়ায় যদি নিহত যুবক প্রবাসে গিয়ে থাকে, তবে বিষয়টি প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় দেখবে। নিহতের পরিবার আমাদের কাছে এলে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করা হবে এবং মরদেহ ফিরিয়ে আনার জন্য যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

এদিকে, দালাল সেন্টু মিয়ার (+২১৮০৯৪৪৬০২৮৯০) সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

নিহত যুবকের মরদেহ দ্রুত দেশে ফেরানো ও দালাল চক্রের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তার পরিবার ও এলাকাবাসী।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category


Development: BTMAXHOST