ভৈরবে জমি নিয়ে প্রতারণা: আওয়ামী লীগ নেতার বিরুদ্ধে হয়রানি ও মিথ্যা মামলার অভিযোগ
নিজস্ব প্রতিনিধি
কিশোরগঞ্জের ভৈরবে জমি কেনার পরও তা বুঝে না পাওয়া, মিথ্যা মামলায় হয়রানি এবং প্রাণনাশের হুমকির অভিযোগ তুলেছেন এক ভুক্তভোগী। শিমুলকান্দি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক দ্বীন ইসলাম মিয়া ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ এনে সংবাদ সম্মেলন করেছেন সাকিব আহমেদ নামের এক ব্যক্তি। শনিবার (২৩ মার্চ) দুপুরে ভৈরব প্রেসক্লাব মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ বিষয়ে বিস্তারিত তুলে ধরেন।
সংবাদ সম্মেলনে সাকিব আহমেদ জানান, তিনি দ্বীন ইসলাম মিয়ার ছেলে রিয়াজুল ইসলামের কাছ থেকে পাঁচ শতাংশ জমি ক্রয় করেন এবং সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেন, যার মধ্যে জমির খারিজ ও খাজনা পরিশোধও অন্তর্ভুক্ত ছিল। তবে জমি দখলে নিতে গেলে বাধার সম্মুখীন হন তিনি।
সাকিবের ভাষ্যমতে, জমি বুঝিয়ে দেওয়ার পরিবর্তে দ্বীন ইসলাম মিয়া ও তার ভাই শহিদুল্লাহ জমি দখলে বাধা দেন এবং তাকে ভয়ভীতি দেখাতে থাকেন। জমি বুঝিয়ে দিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে তারা একাধিক মিথ্যা মামলা দায়ের করেন এবং বিভিন্ন সময় মোটা অঙ্কের চাঁদা দাবি করেন।
তিনি আরও অভিযোগ করেন, জমি বিক্রির পর তার ছেলে রিয়াজুল ইসলাম জমি বুঝিয়ে দিলেও বাবা দ্বীন ইসলাম মিয়া সেটি হস্তান্তর করতে অস্বীকার করেন। বরং পরিত্যক্ত ও কম দামের জমি নিতে তাকে চাপ দেওয়া হয়।
সাকিব আহমেদ জানান, দ্বীন ইসলাম মিয়া একাধিক মামলা দায়ের করলেও প্রতিবারই আদালত তার (সাকিবের) পক্ষে রায় দিয়েছেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে তার পরিবারের সদস্যদের ওপর বিভিন্নভাবে চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে এবং তাদের শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
তার দাবি, স্থানীয়ভাবে বিষয়টি মীমাংসার চেষ্টা করলেও আওয়ামী লীগের ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে দ্বীন ইসলাম মিয়া বিষয়টিকে আরও জটিল করে তুলছেন। ফলে সাকিবের পরিবার চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে এবং বাধ্য হয়ে তারা পুলিশের সহায়তা নিয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলনে সাকিব আহমেদ প্রশাসনের কাছে দ্বীন ইসলাম মিয়া ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে নিরপেক্ষ তদন্ত ও যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান। তিনি বলেন,
“আমি ন্যায়সঙ্গতভাবে জমি কিনেছি এবং সকল আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করেছি। তারপরও ক্ষমতার অপব্যবহার করে আমাকে হয়রানি করা হচ্ছে। প্রশাসনের কাছে আমার আবেদন, এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা হোক।”
সংবাদ সম্মেলনে শিমুলকান্দি ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য নাসির উদ্দিন, স্থানীয় বাসিন্দা তারা মিয়া এবং আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন। তারা বিষয়টির দ্রুত সমাধান চান এবং প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
এই জমি সংক্রান্ত বিরোধকে ঘিরে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। এ বিষয়ে প্রশাসনের কাছে সমাধানের জন্য উভয় পক্ষ বসে শেষ করা যায়। তবে স্থানীয়রা মনে করছেন, নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা গেলে সাকিব আহমেদ ও তার পরিবারের হয়রানি বন্ধ হবে এবং সঠিক সমাধান পাওয়া সম্ভব হবে।
Leave a Reply