ভৈরবে স্কুল সভাপতির সঙ্গে শিক্ষার্থীর মায়ের সম্পর্ক: বিয়ের চাপ, আত্মহত্যার চেষ্টা
কিশোরগঞ্জের ভৈরবে কনফিডেন্স মডেল কিন্ডারগার্টেন স্কুল সভাপতি জাকির হোসেন এর সঙ্গে ঐ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীর মা নার্গিস আক্তার সুমা বেগমের সাথে ব্যক্তিগত সম্পর্ক ও পরে বিয়ের জন্য চাপ সহ্য করতে না পেরে ওই নারী (৮ মার্চ) শনিবার শ্রীনগর নিজ বাড়িতে বিষপান করে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। এমনি ঘটনা ঘটেছে উপজেলার শ্রীনগর ইউনিয়নের শ্রীনগর গ্রামে। এটাকে কেন্দ্র করে এলাকায় চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটেছে।
মো. জাকির হোসেন শ্রীনগর এলাকার মৃত মো: মইজ উদ্দিনের ছেলে। শ্রীনগর কনফিডেন্স মডেল কিন্ডারগার্টেন স্কুলের সভাপতি ও প্রতিষ্ঠাতা সদস্য। তিনি শ্রীনগর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এবং শ্রীনগর উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক পরিচালনা কমিটির অভিভাবক সদস্য। এছাড়া তিনি শ্রীনগর মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নেভি আক্তার কবিতার ভাই।
অন্যদিকে, নার্গিস আক্তার সুমা বেগম শ্রীনগর ইউনিয়নের সৌদি প্রবাসী ছিদ্দিক মিয়ার স্ত্রী এবং পাঁচ সন্তানের জননী। তার শিশুকন্যা কনফিডেন্স মডেল কিন্ডারগার্টেন স্কুলের শিক্ষার্থী।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, স্কুলে যাতায়াতের সুবাদে জাকির হোসেন ও সুমা বেগমের পরিচয় হয়, যা একপর্যায়ে ব্যক্তিগত সম্পর্কে রূপ নেয়। এই সম্পর্ক প্রায় এক বছর ধরে চলছিল বলে অভিযোগ রয়েছে।
পরবর্তীতে সুমা বেগম সংসারের কথা ভেবে সম্পর্ক থেকে সরে আসতে চাইলে জাকির হোসেন তাকে বিয়ের জন্য চাপ দিতে থাকেন। এমনকি বিয়েতে রাজি করানোর জন্য আরও কয়েকজন ব্যক্তিকে মাধ্যমে ব্যবহার করা হয় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
চরম মানসিক চাপে পড়ে সুমা বেগম (৮ মার্চ) শনিবার বিষপান করেন। স্থানীয়রা দ্রুত তাকে উদ্ধার করে বাজিতপুর জহুরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। চিকিৎসা শেষে সোমবার তিনি নিজ বাড়িতে ফিরে আসেন।
স্থানীয়দের দাবি, জাকির হোসেন সুমা বেগমের কাছ থেকে দেড় ভরি স্বর্ণালঙ্কার ও নগদ ৫০ হাজার টাকা নিয়েছেন। তবে এ বিষয়ে তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, জাকির হোসেনের বিরুদ্ধে আরও নানা অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। তবে তিনি প্রভাবশালী পরিবারের সদস্য হওয়ায় তার বিরুদ্ধে কেউ প্রকাশ্যে কথা বলতে সাহস পান না।
এক শিক্ষক (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) বলেন, “স্কুল পরিচালনার সঙ্গে সম্পৃক্ত ব্যক্তিদের অবশ্যই নৈতিকতার মানদণ্ড বজায় রাখা উচিত। একজন সভাপতির বিরুদ্ধে যদি এ ধরনের অভিযোগ ওঠে, তাহলে এটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জন্য লজ্জাজনক। আমরা চাই প্রশাসন বিষয়টি যথাযথভাবে তদন্ত করুক।
এদিকে, মো. জাকির হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
অন্যদিকে, নার্গিস আক্তার সুমা বেগম বলেন, “আমি এখন অসুস্থ, এবিষয়ে পরে কথা বলবো।
এবিষয়ে নার্গিস আক্তার সুমা বেগমের স্বামীর চাচাত ভাই মোয়াজ্জেম হোসেন জানান, এ ঘটনাটা সামাজিক ভাবে একটা ন্যাক্কার জনক ঘটনা। আমাদের বংশপের মানহানি হয়েছে। আমরা চাই এটার সাথে জড়িত দোষীদের শাস্তি হউক।
Leave a Reply