ভৈরব প্রতিনিধি
কিশোরগঞ্জের ভৈরবে বিএনপির দু’পক্ষের দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনায় আহত হয়েছেন ৫ জন। এছাড়া এই ঘটনায় ৫/৬ টি দোকানপাট ও ঘরবাড়ি ভাংচুরের অভিযোগ পাওয়া যায়।
(১৮ জানুয়ারি) শনিবার বেলা ১২ টার দিকে ভৈরব শহরের চন্ডিবের হাসপাতাল সংলগ্ন পৌর শহরের ৯ নং ওয়ার্ড এলাকায় এই সংঘর্ষের ঘটনাটি ঘটেছে।
সংঘর্ষে আহতরা হলেন, ৯ নং ওয়ার্ড বিএনপির যুবদল নেতা ও সাবেক সভাপতি আকবর মিয়ার ছেলে সফিকুল ইসলাম (৪২) , তার ছেলে রাতুল ( ২৭)। অপরদিকে সাবেক কাউন্সিলর বিএনপির নেতা আনার মিয়ার পক্ষের জসিম মিয়া (৩৫) আহতদের মধ্য দুজনকে সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন ফার্মেসীতে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে আরও ৮-১০ জন।
স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, শনিবার বেলা ১২ টার দিকে পৌর শহরের চন্ডিবের এলাকায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ও কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি শরীফুল আলমের আগমনকে কেন্দ্র করে চন্ডিবের এলাকার বিএনপির নেতাকর্মীরা লোকজন নিয়ে জড়ো হয়। এসময়ে ৯নং ওয়ার্ড বিএনপির যুবদল সভাপতি হাজী আক্তার মিয়ার পক্ষের লোকজন ও পৌর শহরের ৯নং ওয়ার্ড বিএনপির সাবেক সভাপতি আকবর মিয়ার ছেলে ওয়ার্ড যুবদল নেতা সফিকুল ইসলামের লোকজনদের হাইব্রিড নেতা ডাকাকে কেন্দ্র করে দুপক্ষের লোকজনের মধ্য সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এসময় গুরুতর আহত হয় যুবদল নেতা সফিকুল ইসলামসহ বেশ কয়েকজন নেতা। পরবর্তীকে খবর পেয়ে থানা পুলিশ ও বিএনপির নেতৃবৃন্দ ঘটনাস্থলে গিয়ে সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণে আনেন।
আহত বিএনপির যুবদল নেতা সফিকুল ইসলাম বলেন, হাসপাতালে আসা বিএনপির নেতা আলম সাহেবের কাছে আমরা আসিলে ওয়ার্ড যুবদল নেতা আক্তার মিয়া, আসাদ মিয়া ও তার লোকজন আমাদেরকে হাইব্রিড নেতা বলে ডাকতে থাকে এবং আলম সাহেব যাওয়ার পরে আমাদের উপর আক্রমণ করে। এসময় দা দিয়ে নাক মুখে কোপ দিয়ে গুরুতর আহত করেন। আমরা এই ঘটনার সাথে জড়িতদের বিচারের দাবি জানাই।
অপরদিকে স্থানীয় ৯নং ওয়ার্ড যুবদল সভাপতি নেতা হাজী মো. আক্তার মিয়া ও পৌর বিএনপির নেতা আসাদ মিয়া বলেন, জগন্নাথপুরের বিএনপির কোন এক নেতা অপর পক্ষ দানিজ মিয়া, শফিকুল ইসলামদের হাইব্রিড নেতা বলে ডাকতে থাকেন। সেই হিসেবে তারা আমাদের দোষী করে আমাদের উপর পরিকল্পিত ভাবে হামলা করেন। এই ঘটনাটি বিএনপির নেতৃবৃন্দ এসে শেষ করে দিলেও পরবর্তীতে পুনরায় তারা আমাদের উপর হামলা চালায়, হামলায় বাড়ির ১২-১৪ জন আহত হয়েছে এবং আমাদের ক্লিনিক ও ফার্মেসী ভাংচুর ও লোটপাট করে নিয়ে গেছে। তারা আওয়ামীলীগের দোসর হিসেবে কাজ করছে বিএনপিকে কলংকিত করার জন্য। আমরা এর সুষ্ঠু বিচার কামনা করছি।
পৌর যুব দলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক ইকবাল হোসেন দানিস বলেন, আনার মিয়ার বাড়ির পক্ষ আর শফিক মিয়ার পক্ষের মধ্যে ঝামেলার সৃষ্টি হয়। দুই গ্রুপের মধ্যেই এক সময় আওয়ামীগের সদস্য ছিলো। যে সময় আলম সাহেব হাসপাতালে আসে তখন জগন্নাথপুরের লিটন সোহরাব কে দেখে হাইব্রিড বলে। তখন আমরা ভিতরে আলম সাবেহের সাথে এটা নিয়েই কথা কাটাকাটি হয়ে আনার এর ভাই ভাতিজা লিটনকে দেখিয়ে দিলে এই নিয়ে দু’পক্ষের সংঘর্ষ হয়।
এ বিষয়ে ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা.রেজিনা পারভীন জানান, মারামারি ঘটনায় এই পর্যন্ত ৫ জন রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন। তাদের মধ্য ২ জনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় কিশোরগঞ্জ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে বলে তিনি জানান।
এবিষয়ে উপজেলা বিএনপির সাধারন সম্পাদক মো: আরিফুল ইসলাম বলেন, আমরা বিএনপি পরিবার হিসেবে সবসময় ঐক্যবদ্ধ থাকার চেষ্টা করি। ৯নং ওয়ার্ডে যুবদলের দুই পক্ষের মধ্যে যে ঘটনা ঘটেছে, তা অত্যন্ত দুঃখজনক এবং দলের আদর্শের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। আমিসহ নেতাকর্মীরা এই সংঘর্ষ থামানোর আপ্রাণ চেষ্টা করেছি। এই সংঘর্ষ বা ঝগড়া আওয়ামী লীগের দোসররা তাদেরকে লিলিয়ে দিয়েছে। আমাদের যুবদলের নেতাকর্মীদের মনে রাখতে হবে, ব্যক্তিগত মতভিন্নতা কখনো দলের বৃহত্তর স্বার্থকে ক্ষতিগ্রস্ত করা উচিত নয়।
Leave a Reply