ভৈরব বাজারে এক নারী চোরকে আটকের পর বাদী না থাকায় থানা থেকে চোরকে ছেড়ে দিল পুলিশ
ভৈরব প্রতিনিধি
কিশোরগঞ্জের ভৈরব বাজারে এক মহিলার ভ্যানিটি ব্যাগ থেকে দশ হাজার টাকা চুরির ঘটনা ঘটেছে। এ সময় ভুক্তভোগী নারী চোর নারগিছ (২৮) নামে এক মহিলাকে হাতেনাতে ধরেন। বুধবার দুপুর বারোটার দিকে পৌরসভার সামনে এ ঘটনা ঘটে। পরে স্থানীয়রা আটক নারগিছকে পৌরসভার ভেতরে কিছু সময় আটকে রাখেন। খবর পেয়ে ভৈরব শহর পুলিশ ফাঁড়ির এটিএএসআই সাইফুল ইসলাম ঘটনাস্থলে এসে তাকে থানায় নিয়ে গেলেও পরক্ষণে কথাবার্তা বলে নারী চোরকে ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ। আটককৃত নারগিছ হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার বিষ্ণুপুর গ্রামের লিটন মিয়ার স্ত্রী।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অভিযোগকারী নারী জানান, তিনি ও তার বোন কেনাকাটার জন্য ভৈরব বাজারে এসেছিলেন। পৌরসভার সামনে ব্যাগে কেউ হাত দিচ্ছে বুঝতে পেরে নারগিছকে হাতেনাতে ধরেন। ততক্ষণে তার ব্যাগ থেকে দশ হাজার টাকা চুরি হয়ে যায়। আটককৃত নারগিছকে পৌরসভার ভেতরে আটকে রেখে পুলিশে খবর দেওয়া হয়।
পরে জানা যায়, চুরির ঘটনায় আরও পাঁচ থেকে সাতজন ভুক্তভোগী পুলিশের কাছে অভিযোগ নিয়ে আসেন। তবে নারগিছ অভিযোগ করেন, তিনি শুধু ব্যাগের চেইন খুলেছেন, কিন্তু টাকাগুলো অন্যরা নিয়ে গেছে। ভুক্তভোগীর কাছ থেকে বিকাশ নম্বর নিয়ে নারগিছের বাবার সঙ্গে যোগাযোগ করলে দশ হাজার টাকা ফেরত দেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়।
শহর ফাঁড়ির এটিএএসআই সাইফুল ইসলাম জানান, ভুক্তভোগী নারী মামলা দিতে রাজি না হওয়ায় থানা থেকেই চোরকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
তবে স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, বাজারে চুরি-ছিনতাইয়ের ঘটনা বেড়ে গেলেও পুলিশ তেমন কার্যকর ব্যবস্থা নিচ্ছে না।
গত কয়েক সপ্তাহে ভৈরব বাজারে একাধিক চুরি-ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। নিউ মার্কেটের সামনে থেকে এক মহিলার সোনার চেইন চুরি, নদীর পাড় থেকে সাংবাদিকের মোটরসাইকেল চুরি, এবং ব্যবসায়ীর কাছ থেকে অস্ত্রের মুখে টাকা ও মোবাইল ছিনিয়ে নেওয়ার মতো ঘটনা ঘটেছে।
শহর ফাঁড়ির ইনচার্জ আমিন আল মেহেদী জানান, তিনি নতুন দায়িত্ব নিয়েছেন এবং দ্রুত চুরি-ছিনতাই রোধে কার্যকর পদক্ষেপ নেবেন। তবে আজকের ঘটনায় বাদী মামলা না দেওয়ায় আটক নারগিছকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
ভুক্তভোগীরা প্রশ্ন তুলেছেন, বাদী না থাকায় চোরকে ছেড়ে দেওয়া কতটা ন্যায়সঙ্গত। অনেকেই মনে করেন, পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করলে অপরাধীদের আইনের আওতায় আনা সম্ভব। অন্যথায় এ ধরনের অপরাধের হার আরও বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
Leave a Reply