ভৈরব প্রতিনিধি
আজ ১৯ ডিসেম্বর ভৈরব মুক্ত দিবস। ১৬ ডিসেম্বর আনুষ্ঠানিক ভাবে বিশ্বের মানচিত্রে বাংলাদেশ নামের একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের জন্ম হলেও বন্দরনগরী ভৈরব তখনো ছিল অবরুদ্ধ। দেশ মুক্ত হলেও চূড়ান্ত বিজয়ের স্বাদ পেতে ভৈরববাসীকে অপেক্ষা করতে হয়েছে আরো তিনদিন। অবশেষে পাক হানাদার বাহিনী ভৈরবের মিত্র বাহিনী ও দামাল ছেলেদের হাতে আত্নসর্মপন করতে বাধ্য হয়।
পাক হানাদার বাহিনী ১৯৭১ সালের সারা দেশের ন্যায় ভৈরবেও নারকীয় হত্যাকান্ড শুরু করে। তাদের দোসর আলবদর, রাজাকার ভৈরব বাজারের তিন ভাগের দুই ভাগ জ্বালিয়ে এবং ব্যবসায়ীদের সিন্দুক ভেঙ্গে টাকা পয়সা ও মালামাল লুট করে।
অসংখ্য নারী-পুরুষ, আবাল-বৃদ্ধ বনিতাকে নির্বিচারে হত্যা, মা-বোনদের ইজ্জত লুট করে। বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহীদ হাবিলদার আব্দুল হালিম রেলওয়ে সেতুর পূর্ব পাশে একটি ও পশ্চিম পার্শে দুটি স্পেন ডিনামাইট দিয়ে উড়িয়ে মিত্র বাহিনীর অগ্রযাত্রাকে ব্যহত করার প্রয়াস চালায়। ১৬ ডিসেম্বর পাক হানাদারদের প্রধান জেনারেল নিয়াজী তার দলবলসহ আত্নসর্মপন করলেও ভৈরবে পাক হানাদার বাহিনী সেই খবর পায়নি। ফলে ১৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত পাক হানাদারদের সাথে ছোট খাটো সংঘর্ষ চলতে থাকে ভৈরবের মুক্তিযোদ্ধাদের।
১৯ ডিসেম্বর পাক হানাদারদের হাই কমান্ডের নির্দেশ পাওয়ার পর আত্নসর্মপনের পূর্ব মহুর্তে তৎকালীন ন্যাশনাল ব্যাংক বর্তমানে সোনালী ব্যাংকের রক্ষিত টাকা পয়সা লুটপাট করে নিয়ে ডিনামাইট দিয়ে মাধ্যমে উড়িয়ে দেয়। এছাড়াও আবাসিক এলাকার ঘর-বাড়িতে লুটপাট চালায় তারা এমন কি বিভিন্ন গ্রামে মুক্তিযোদ্ধাদের বাড়ি খুজেঁ খুজেঁ আগুন দিয়ে অনেক বাড়ি ঘর পুড়িযে দেই। পরে ১৯ ডিসেম্বর তারা আত্নসর্মপন করতে বাধ্য হয়। পাক হানাদার বাহিনীর হাত থেকে মুক্ত হয় ভৈরব।
এভাবে একটি অধ্যায়ের সমাপ্তি এবং ভৈরবের মানুষ পাকিস্তানি পতাকাকে পদদলিত করে বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করে। স্বাধীনতার মুক্তির স্বাদ লাভ করে। ভৈরবের মানুষ প্রতি বছরই এ দিনটিকে শ্রদ্ধা ভরে স্বরণ করে।
Leave a Reply