“ভৈরবে ভুয়া দন্ত চিকিৎসক ও মামলার আসামী শামীমা আক্তার গ্রেফতার “
নিজস্ব প্রতিবেদক
কিশোরগঞ্জের ভৈরবে ভুয়া দন্ত চিকিৎসক ও মামলার আসামী নাফিসা ডেন্টাল কেয়ারের দন্ত চিকিৎসক শামীমা আক্তার ফারজানাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।(৭ ডিসেম্বর) শনিবার রাত ৯টায় শহরের নিউ টাউন কমলপুর মোড় এলাকা শামীমার চেম্বার থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পরে গ্রেফতারকৃতকে রাতেই কিশোরগঞ্জ সদর থানায় পাঠানো হয়েছে এবং রোববার দুপুরে কিশোরগঞ্জ আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ভৈরব থানার অফিসার ইনচার্জ ( ভারপ্রাপ্ত) মোঃ শাহিন মিয়া।
জানাযায়, গেল (২০ অক্টোবর) রোববার ইতালি প্রবাসী হাবিবুর রহমান বাদী হয়ে ভুয়া দন্ত চিকিৎসক শামীমার বিরুদ্ধে ভৈরব থানায় প্রতারণার ও ভুল চিকিৎসার অভিযোগ এনে থানায় মামলাটি দায়ের করেন। মামলা দায়েরের পর দীর্ঘদিনফারজানা পলাতক ছিলো। পরে ৭ ডিসেম্বর শনিবার রাতে গোপনে তার চেম্বারে বাহির থেকে সাটার লাগিয়ে ভিতরে রোগীর চিকিৎসা করছিলো। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শনিবার রাত ৯টার দিকে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে।
পুলিশ ও মামলার এজাহার সুত্রে জানা যায়, গত ২৬ আগস্ট ভৈরব শহরের জগন্নাথপপুর কান্দার হাটি এলাকার বাসিন্দা ইতালি প্রবাসী মো. হাবিবুর রহমান নামে এক রোগীর দাঁতের চিকিৎসা নিতে ডেন্টিস্ট শামীমা আক্তার মালিকাধীন নাফিসা ডেন্টাল কেয়ারে যান। তিনি নিজেকে ডেন্টাল সার্জন বলে আমার নিকট পরিচয় দিয়ে বিশ্বাস স্থাপন করে। সেখানে যাওয়ার পর ৯০ হাজার টাকার বিনিময়ে প্রবাসী দাঁত পরীক্ষা করে সামনের ৩টি দাঁতে ছিদ্র ক্যাপ পড়িয়ে দেয়। চিকিৎসা কিছুদিন পর প্রবাসী ইতালি চলে যায়। ইতালি চলে গেলে সেখানে হঠাৎ একদিন ক্যাপ খুলে যায়। পরবর্তীতে দেখতে পায় চিকিৎসক তাকে ভূল চিকিৎসা করে ৩টি দাঁতের পরিবর্তনে তার ভালো দাতঁসহ ১৪ টি দাঁত ঘষিয়ে ক্যাপ করে দেই। এর দাঁতের ক্যাপ খুলে যাওয়ার পরবর্তীতে দাঁতে সমস্যা দেখা দিলে আবারও তাঁর কাছে যাই। তখন আমার দাঁতের মাড়ি সহ ফুলে মুখের অবস্থা খুব খারাপ হয়ে যায়। দেশে আরেক জন দন্ত চিকিৎসকের কাছে গেলে তিনি জানান , পূর্বের ভুল চিকিৎসায় দাঁতে খুব মারাত্মক সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। এতে আমার ১৪ টি দাঁত পুরোপুরি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
এই ঘটনায় ভুক্তভোগী মো. হাবিবুর রহমান ভুল চিকিৎসা জনিত কারণে গুরুত্বর অসুস্থ ও ১৪ টি দাঁত হারানোর কারণে তিনি বাদী হয়ে ডেন্টিস্ট শামিমা আক্তার কে বিবাদী করে ভৈরব থানায় একটি মামলা করেন। মামলা নং-২৭।
ভুক্তভোগী অভিযোগকারী মো. হাবিবুর রহমান বলেন, আমি একজন ইতালি প্রবাসী। বিদেশ থেকে আসার পর আমার দাঁত ব্যথা দেখা দেয়। আমি প্রবাসী হওয়ায় দন্ত চিকিৎসালয় সম্পর্কে আমার ভালো ধারণা নাই। আমার বাড়ী ও ডাক্তার শামীমা আক্তারের বাড়ী একই এলাকায় হওয়ায় সে আমাকে দন্ত চিকিৎসক বলে নিজেকে পরিচয় দেয়। তার ভূল চিকিৎসায় আমার মুখের ১৪ টি দাঁত হারালাম। পরবর্তীতে আমি তার কাছে এই কর্মকান্ডের বিষয় জানতে গেলে সে আমাকে বিভিন্ন কথা বলে এবং হুমকি, ধামকি প্রদান করে। আমি আমার অঙ্গহানী ও সঠিক সঠিক বিচারের আশায় থানায় মামলা দায়ের করেছি।
এ বিষয়ে ভৈরব থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো.শাহিন জানান, ইতালি প্রবাসী হাবিবুর রহমান নামের একজনের দাঁতে ভূল চিকিৎসা অভিযোগে শামীমা আক্তার নামের একজন দন্ত চিকিৎসক দীর্ঘদিন যাবত পলাতক ছিলেন। তাকে গতকাল রাতে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতারের পর তার নিরাপত্তার স্বার্থে রাতেই কিশোরগঞ্জ সদর থানায় প্রেরণ করা হয়।
Leave a Reply