পাগলা মসজিদের দানবাক্স
ইয়াছিনকে জীবনসঙ্গী করে পেতে প্রেমিকার চিঠি

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি

কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদ। যেখানে টাকা-পয়সা, সোনা-রূপা, বৈদেশিক মুদ্রা ছাড়াও পাওয়া যায় অনেক ধরনের চিঠি। যা আল্লাহকে উদ্দেশ্য করে পাগলা মসজিদের দান বাক্সে ফেলে রাখেন সাধারণ মানুষ। এবার ইয়াছিন আরাফাত নামে এক ছেলেকে জীবনসঙ্গী হিসেবে পেতে চিঠি লিখেছেন এক নারী।

শনিবার (৩০ নভেম্বর) ১০টি দানবাক্স ও একটি ট্রাংক থেকে ২৯ বস্তা টাকা পাওয়া গেছে। সঙ্গে পাওয়া গেছে বৈদেশিক মুদ্রা ও সোনার গয়না ও বিভিন্ন চিরকুট।

প্রিয় মানুষকে জীবনসঙ্গী করে পেতে দানবাক্সে চিঠি লিখেছেন এক প্রেমিকা। চিঠিতে লেখা ছিল-

‘বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

আসসালামু আলাইকুম।

হে আমার রব,

তুমি আমার প্রিয় মানুষ টাকে আমার জীবন সঙ্গী হিসেবে আমায় করে দাও। আমি তোমার পরে আমার মা-বাবার পরে আমি তাকে অনেক ভালোবাসি। তুমি তো সবকিছুই জানো। আমি আমার প্রতিটি মোনাজাতে শুধু তাকেই চাই। আল্লাহ সে যদি আমার জন্য কল্যাণকর না হয়, তাহলে তুমি তার ভিতর কল্যাণ দান করো আর আমায় করে দিও। আল্লাহ তোমার কাছে আমার একটাই যাওয়া তুমি আমার প্রিয় মানুষটাকে আমার করে দিও।

ইতি
মনি আক্তার
যাকে নিয়ে লেখা
ইয়াসিন আরাফাত

এ ছাড়া এবার পাগলা মসজিদের দানবাক্সে পাওয়া যায় সুন্দর ও চিকন হতে চেয়ে একটি চিঠি, প্রেমিক প্রেমিকা পেতে চিঠি, ছেলেকে ভালো করার জন্য মায়ের চিঠি, আব্বু-আম্মুকে ভালো রাখার জন্য সন্তানের চিঠি, প্রিয় মানুষকে সব সময় ভালো রাখার জন্য চিঠি, অসমাপ্ত কাহিনি নিয়ে চিঠি, মা-বাব ডাক শোনার জন্য চিঠিসহ নানান রকমের চিঠি।

কিশোরগঞ্জের জেলা প্রশাসক ও পাগলা মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি ফৌজিয়া খান ও পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হাছান চৌধুরীর উপস্থিতিতে দানবাক্সগুলো খোলা হয়। এবার ৩ মাস ১৪ দিন পর মসজিদের ১০টি দানবাক্স ও একটি ট্রাংক খোলা হয়। প্রায় ৪০০ জনের একটি দল ১০ ঘণ্টা গণনা শেষে ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের দানবাক্সে এবার রেকর্ড ৮ কোটি ২১ লাখ ৩৪ হাজার ৩০৪ টাকা পাওয়া গেছে।

এর আগে, ২০২২ সালের ১ অক্টোবর এক মা প্রতিবন্ধী মেয়ের সুস্থতা কামনা করে মসজিদের দানবাক্সে প্রার্থনামূলক চিঠি লিখেছিলেন।

জেলা প্রশাসক ও মসজিদ কমিটির সভাপতি ফৌজিয়া খান বলেন, কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদটি ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের অন্যতম একটি জায়গা। সব ধর্মের মানুষ এখানে দান করে থাকেন। তাদের দানের অর্থ দিয়ে একটি দৃষ্টিনন্দন মসজিদ কমপ্লেক্স করা হবে। যেখানে একসঙ্গে জামাতে নামাজ আদায় করতে পারবেন ৩০ হাজার মুসল্লি।