নাজির আহমেদ আল-আমিন
বিছানায় পড়ে ছিলো অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী ও দুই সন্তান আর স্বামী গলায় রশি দিয়ে ঝুলানো মরদেহ। এমনি ঘটনা ঘটেছে কিশোরগঞ্জের ভৈরবে। পুলিশ ও স্থানীয়দের ধারণা ৭ মাসের অন্তঃসত্তা স্ত্রী ও দুই শিশু সন্তানকে হত্যা করে স্বামী আত্মহত্যা করেছে।(২৬ নভেম্বর) মঙ্গলবার বিকালে শহরের রাণী বাজারের শাহী মসজিদের শাহজাহান মিয়ার ৭ তলা একটি বিল্ডিং এই ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন, নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার পিরিজকান্দী এলাকায় মৃত গরেঙ্গ চন্দ্র বিশ্বাসের ছেলে জনি বিশ্বাস (৩২), তার স্ত্রী গাজিপুরের নির্মল মল্লিকের মেয়ে নিপা মল্লিক (২৬), ছেলে দ্রুব বিশ্বাস (৭) ও মেয়ে কথা বিশ্বাস (৪)।
স্থানীয়রা জানায়, ৩ মাস আগে মৃত শাজাহান মিয়ার বিল্ডিং বাড়িটিয়া হিসেবে উঠে। জনি স্থানীয় একটি ওয়াকসপে কাজ করতেন। প্রতিদিন সকালে সে কাজে বের হয়। কিন্তু আজ দুপুর হয়ে গেলেও তাদের দরজা না খুলায় দুপুর ৩ টার দিকে নিচ থেকে মানুষ এনে দরজা ভেঙ্গে ডুকলে তাদের মরদেহ পরে আছে দেখা যায়। কিন্তু কি কিভাবে ঘটনাটি ঘটেছে তা কেউ জানেন না।
নিহত জনি বিশ্বাসের মা জানায়, আমি নরসিংদীর রায়পুরার পিরিজকান্দী এলাকায় থাকি আমাকে ভৈরব বাজার থেকে ফোন দিয়ে জানায় আপনি তাড়াতাড়ি যেই কাপড় পড়ে আছেন সেই কাপড় পড়েই চলে আসেন। ভৈরবে আপনার ছেলের অঘটন ঘটেছে। পরে আমি ভৈরব বাজারে আসলেও রাণী বাজার চিনি না, কষ্ট করে লোকজনের মাধ্যমে এখানে এসে শুনি এই ঘটনা। আমি এখনো তাদের লাশ দেখিনি। কিভাবে যে কি হয়ে গেলো কিছুই বুজলাম না।
নিহত জনি বিশ্বাসের ভাই সমীর চন্দ্র বিশ্বাস বলেন,আমার ভাই অত্র এলাকায় একটি ওয়ার্কসশে কাজ করেন। আমি খবর পেয়ে এসে দেখি আমার ভাইয়ের পরিবারের কেউ বেঁচে নাই। ভাইয়ের বউ রক্তাক্ত অবস্থায় গলায় জবাই করা, দুই ছেলে ও মেয়ে মৃত অবস্থায় বিছানায় পড়ে আছে। আর আমার ভাই গলায় ফাঁসী দিয়ে ফ্যানের সাথে ঝুলন্ত অবস্থায় রয়েছে। এখন এই ঘটনার সুষ্ঠ তদন্ত করার দাবী জানাচ্ছি।
বাড়ির মালিক মৃত শাহজাহান মিয়ার স্ত্রী জানায়, গেল তিন মাস আগে নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার পিরিজকান্দী এলাকায় বাসিন্দা নিহত জনি বিশ্বাস এই বাড়িতে উঠেন। তারপর একমাস যাওয়ার পর তারা বলেন বাসা ছেড়ে দিবেন। কারণ হিসেবে জানতে চাইলে নিহত জনি বিশ্বাস বলেন বাসা ভাড়া বেশী তাই কম বাড়ার বাসায় উঠবো। কিন্তু বিকেলে লোকদের মুখে শুনে এসে দেখি এ-ই অবস্থা।
ভৈরব থানার ওসি শাহিন জানায়, আমরা ৯৯৯ এ কলের মাধ্যমে খবর পেয়ে ঘটনাস্থালে আসি। ধারণা করা হচ্ছে স্ত্রী ও ছেলেমেয়ে হত্যার পর স্বামী আত্মাহত্যা করেছে। আমাদের ক্রাইমসিনের কর্মকর্তারা এসেছেন। এখন মরদেহের সুরতহাল করেছি। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
Leave a Reply