কিশোরগঞ্জের ভৈরব পৌর শহরের রানীর বাজার এলাকার একটি অবৈধ কারখানায় বিষাক্ত ও পচা চিনি দিয়ে ভেজাল গুড় তৈরি হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। জানা যায়, কারখানায় ইন্ডিয়া থেকে আমদানি করা নষ্ট চিনি, ফিটকিরি, হাইড্রোজ ও রং মিশিয়ে এই গুড় তৈরি করা হয়।
সোমবার রাতে সাংবাদিকরা কারখানাটি পরিদর্শনে গেলে স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, কারখানার মালিক সিন্দু পোদ্দার ও তার ছেলে শিমুল পোদ্দার দীর্ঘদিন ধরে এ কাজ করে আসছেন। কারখানার ভেজাল গুড় তৈরি হলেও প্রশাসন কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না। কারখানার কালো ধোঁয়া ও দুর্গন্ধে এলাকাবাসী অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন, কিন্তু ভয়ে প্রতিবাদ করতে সাহস পান না তারা।
স্থানীয় বাসিন্দা রহিমা বেগম জানান, “আমরা কারখানার কালো ধোঁয়া আর দুর্গন্ধে নাজেহাল। প্রশাসনকে এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ জানাই।” অন্যদিকে হোটেল মালিক ইয়াসিন মিয়া বলেন, “প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় এই ভেজাল গুড় তৈরি হয়, তাই কেউ মুখ খোলে না।”
এ বিষয়ে কারখানা মালিক শিমুল পোদ্দার বলেন, চিনি দিয়েই আমি গুড় তৈরি করি। ইন্ডিয়া থেকে চিনি আসে। সারা বাংলাদেশেই চিনি দিয়ে গুড় তৈরি হয়। তাই আমিও তৈরি করি। আখের অনেক দাম আবার তা সারা বছার পাওয়া যায় না। তাই চিনিতেই ভরসা।
সে আরো জানায়, প্রতিদিন ১০০ পাটা গুড় বানাতে পারেন। প্রতি বাটা গুড় বিক্রি হয় ১৫০০ থেকে ২ হাজার টাকায়। ভৈরবে এক প্রভাবশালী নেতাকে নিয়মিত গুড় বানিয়ে দিতেন তার প্রতিষ্ঠানে বিক্রির জন্য এবং নিজেও বিক্রি করতেন৷
ভৈরব পৌরসভার স্যানিটারি ইন্সপেক্টর নাসিমা বেগম জানান, সাংবাদিকদের মাধ্যমে খবর পেয়ে কারখানাটি পরিদর্শন করেছেন এবং কারখানাটিকে তালাবদ্ধ করে রেখেছেন। আগামীকাল (৫ নভেম্বর) উপজেলা নির্বাহী অফিসার শবনম শারমিন অভিযান পরিচালনা করবেন বলে জানা গেছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. বুলবুল আহমেদ জানান, “ফিটকিরি, হাইড্রোজ ও রং মেশানো ভেজাল গুড় স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। এটি খেলে লিভারসহ শরীরের বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গের ক্ষতি হতে পারে।”
এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শবনম শারমিন মুঠোফোনে জানায়, আপনারা সরেজমিনে এটাকে নিয়ে একটি প্রতিবেদন তৈরি করেন। আর আমরা ভুক্তাঅধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের লোকজন নিয়ে অভিযান পরিচালনা করবো।
Leave a Reply