“কুলিয়ারচরে সরকারি জলমহাল ঐতিহ্যবাহী নাজিরদিঘীকে রক্ষার্থে এলাকাবাসী বিক্ষোভ”
নাজির আহমেদ আল-আমিন
কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচরে সরকারি জলমহাল ঐতিহ্যবাহী নাজিরদিঘীকে বাঁচাতে বিক্ষোভ মানববন্ধন করেছে এলাকাবাসী।(২২ অক্টোবর) মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার উছমানপুর ইউনিয়নের নাজিরদীঘি এলাকায় জলমহালের সামনে ব্যানার ও ফেস্টুন নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল ও শেষে মানববন্ধন করে।
“ভূমিদস্যু হঠাও, নাজিরদিঘী বাচাঁও” এ স্লোগানে এসময় বক্তব্য রাখেন, উছমানপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো. আসাদ মিয়া, সাবেক ইউপি সদস্য মো. সাদিরুজ্জামান বাছির, দিঘীরপাড় গ্রামের হাজী আব্দুস সাত্তার, হাজী দ্বীন ইসলাম, মো. আব্দুল কাইয়ুম ও নূর মোহাম্মদ প্রমূখ।

এলাকাবাসীর মানববন্ধন ও বিক্ষোভ।
এ দিঘী নিয়ে রাজনৈতিক কোন প্রভাব নেই উল্লেখ করে মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, পার্শ্ববর্তী বাজিতপুর উপজেলার নোয়াপাড়া গ্রামের মুত বেলায়েত হোসেনের পুত্র ভূমিদস্যু নামে পরিচিত মোশাররফ হোসেন রেকর্ড রুমের কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে তাদের ঐতিহ্যের প্রতীক শতবর্ষী সরকারি জলমহাল নাজিরদিঘীর কাগজপত্র জাল জালিয়াতির মাধ্যমে অবৈধভাবে জবর-দখলের পায়তারা করে আসছে।
তারা আরো বলেন, সরকারি জলমহাল নাজিরদিঘীর নামে একটি গ্রাম ও একটি মৌজার নামকরণ করা হয়েছে। নাজিরদিঘীর চারপাশে কমপক্ষে ২শত পরিবার বসবাস করে। নাজিরদিঘীর পাড়ে বসবাসকারীরা হাঁস লালন পালন করে আর্থিক ভাবে লাভবান হচ্ছে। একই সঙ্গে প্রকৃত মৎস্য চাষীরা সরকারের নিকট থেকে দিঘীটি লিজ নিয়ে মাছ চাষ করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছে।
নাজিরদিঘী গ্রামবাসী তাদের ঐতিহ্যকে ধারণ করে জলমহালকে রক্ষার্থে ভূমিদস্যু মোশাররফ হোসেনের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী করে তারা আরো বলেন, নাজিরদীঘি মৌজার সি.এস ১নং খতিয়ানের ১১১২ নং দাগের মোট জমি ২৪.৮৪ একর। ২৪.৮৪ একর ভূমি ক-নদী হিসেবে সি.এস ১নং খতিয়ানে অর্ন্তভূক্ত হয়ে রেকর্ডের বর্হিভূত অথবা মালিক অনির্দিষ্ট মর্মে লিপি হয়ে আছে। এর পরও ভূমিদস্যু মোশাররফ হোসেন এ নাজিদিঘী জলমহালটি তাদের পৈত্রিক সম্পত্তি দাবী করে অবৈধ কাগজপত্র তৈরি করে নিজের দখলে নেওয়ার চেষ্টা করে আসছে এবং দিঘীরপাড় এলাকাবাসীকে বিভিন্ন ভাবে হুমকি ধামকি দিয়ে আসছে। মোশাররফ হোসেনের হুমকি ধামকিতে এলাকার সাধারণ মানুষ আতংকে দিনাতিপাত করছে বলেও দাবী করেন তারা।
নাজিরদিঘীর পাড়ে এলাকাবাসী।
এ বিষয়ে দুপুর ২টার দিকে নাজিরদিঘী গ্রামবাসীর পক্ষে উপজেলা পরিষদের প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাবিহা ফাতেমাতুজ-জোহরা’র নিকট জেলা প্রশাসক বরাবর গণস্বাক্ষরকৃত একটি স্মারকলিপি জমা দেয় নাজিরদিঘী গ্রামের মৃত আব্দুল কাদিরের ছেলে উছমানপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সদস্য মো. সাদিরুজ্জামান বাছির।
নাজিরদিঘী জলমহাল দখলের চেষ্টার দায়ে অভিযুক্ত মোশারফ হোসেন নিজেকে নির্দোষ দাবী করে সাংবাদিকদের বলেন, এটা আমার পৈত্রিক সম্পত্তি এবং এর পক্ষে আমার সকল কাগজপত্রই আছে। যে কাগজপত্র দেখে বিজ্ঞ আদালত আমার পক্ষে একাধিকবার রায় দিয়েছেন।
স্মারকলিপি গ্রহনের সত্যতা স্বীকার করে উপজেলা পরিষদের প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাবিহা ফাতেমাতুজ-জোহরা বলেন, স্মারকলিপিটি তিনি জেলা প্রশাসক বরাবর পাঠিয়ে দিবেন।
Leave a Reply