কিশোরগঞ্জের ভৈরবে ট্রেনের ইঞ্জিন হুইল স্লিপের কারণে যাত্রীরা গণছিনতাইয়ের শিকারের অভিযোগ পাওয়া গেছে। (২৩ সেপ্টেম্বর) সোমবার রাত পৌনে ১২টার দিকে রেলওয়ে সেতুর ভৈরব প্রান্তে এই ঘটনা ঘটে।
এ বিষয়ে রেলওয়ে কর্মকর্তাদের ধারণা ট্রেনটি অতিরিক্ত লোডে থাকা এবং প্রচুর বৃষ্টির কারণে উঁচুতে উঠতে গিয়ে হুইল স্লিপের শিকার হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অনেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই সমস্যাটির কথা জানিয়ে পোস্ট দেন।
জানা যায়, চট্টগ্রামগামী আন্তঃনগর মহানগর (৭২২) ট্রেনের ইঞ্জিন হুইল স্লিপের শিকার হয়ে ভৈরব রেলওয়ে সেতুতে উঠতে গিয়েও উঠতে পারেনি। এতে করে ট্রেনটি সেতুর ভৈরব প্রান্তে অন্তত ২৫ মিনিট থেমে থাকে। বার বার চেষ্টা করেও সেতুতে উঠতে না পেরে পুনরায় ট্রেনটি স্টেশনে ফিরিয়ে আনে চালক। এদিকে গভীর রাতে অনিরাপদ স্থানে থেমে থাকার কারণে ট্রেনের অনেক যাত্রী গণছিনতাইয়ের শিকার হয় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
রেলওয়ে কর্তৃপক্ষদের সাথে কথা বলে জানা যায়, প্রতিদিন এক জোড়া আন্তঃনগর মহানগর এক্সপ্রেস ট্রেন ঢাকা-চট্টগ্রামের মধ্যে চলাচল করে। ২৩ সেপ্টেম্বর ট্রেনে আসনের দ্বিগুণের অধিক যাত্রী ছিল। মহানগর গৌধুলী ট্রেনটি ভৈরব স্টেশনে যাত্রাবিরতি সময় রাত ১১টায়। ট্রেনটি ভৈরব স্টেশনে আসে ৩২ মিনিট বিলম্বের ১১টা ৩২ মিনিটে। ছেড়ে যায় ১১টা ৩৫ মিনিটে। কয়েক মিনিট পরেই ট্রেনটি ভৈরব সেতুতে উঠতে গিয়ে হুইল স্লিপের শিকার হয়। পরে ১২টা ৮ মিনিটে ট্রেনটি ভৈরব স্টেশনে ফিরে আসে। স্টেশনে ফিরিয়ে এনে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার যাত্রীদের কামড়া থেকে নামানো হয়। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার যাত্রীদের নোয়াখালীগামী আন্তঃনগর উপকূল এক্সপ্রেসে করে গন্তব্যে পাঠিয়ে মহানগর ট্রেনের লোড কমানো হয়। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার যাত্রীদের নিয়ে উপকূল এক্সপ্রেস ট্রেনটি মহানগরের আগে ভৈরব স্টেশন ছেড়ে যায়। পরে ১২টা ৪৫ মিনিটে মহানগর ট্রেনটি সেতু অতিক্রম করে গন্তব্যে যায়।
ভুক্তভোগী ও স্থানীয়রা জানায়, স্টেশনের অদূরে একটি সেতু রয়েছে। স্টেশন থেকে সেতুতে উঠার জায়গাটি অনেক উঁচুতে। এই অবস্থায় গভীর রাতে ট্রেনটি থেমে থাকায় যাত্রীদের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হয়। সাধারণত স্থানটিতে সব সময় ছিনতাইকারীদের আনাগোনা থাকে। ফলে হাতের কাছে ট্রেনের অসংখ্য যাত্রী পেয়ে ছিনতাইকারীরা নানা কৌশলে যাত্রীদের ব্যাগ ও মুঠোফোন কেড়ে নেয়।
ভৈরব স্টেশন মাস্টার মো. ইউসুফ বলেন, সোমবার মহানগর ট্রেনে অতিরিক্ত যাত্রী ছিল। বিশেষ করে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বগিটিতে যাত্রীদের ভিড় ছিল। সেতু অতিক্রম সময় ভৈরবে টানা বৃষ্টি হচ্ছিল। বৃষ্টি হলে লাইন পিচ্ছিল থাকে। এই অবস্থায় অতিরিক্ত লোডে থাকা ট্রেনটিকে নিয়ে উপরে দিকে উঠতে গিয়ে ইঞ্জিন হুইল স্লিপ হয়।
যাত্রীদের গণছিনতাইয়ের অভিযোগ বিষয়ে জানতে চাইলে ভৈরব রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলীম হোসেন সিকদার অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, আমাদের কাছে কেউ ছিনতাইয়ের অভিযোগ করেননি।
Leave a Reply