ভৈরবের মাধ্যমিক শিক্ষকদের বৈষম্য দূরীকরণে মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান করেছে।
এম আর রুবেল
বৈষম্য দূরীকরণে মাধ্যমিক স্তরের বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে জাতীয়করণ ও জাতীয়করণের পূর্ব পর্যন্ত শিক্ষা প্রশাসনের বিভিন্ন পদে সরকারি স্কুলের শিক্ষকদের পদায়ন বন্ধ রাখাসহ শিক্ষা সংস্কার কমিশন গঠনের দাবিতে মানববন্ধন করেছে ভৈরবের মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষকগণ। (২৪ সেপ্টেম্বর) মঙ্গলবার সকালে উপজেলা চত্বরে মানববন্ধন শেষে মিছিল নিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে স্মারকলিপি প্রদান করেন তারা।
এসময় মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি ভৈরব উপজেলা শাখার সভাপতি মো. পেয়ার হোসেন, যুগ্ম সম্পাদক মো. মোক্তার হোসেন, আফতাবুল উলুম আলিম মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো.আসাদুল্লাহ ও আদর্শ দাখিল মাদ্রাসার সুপার মো. জয়নুল আবেদীন প্রমুখ।
এসময় ভৈরব এমপি পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এমএ মোহিত, শিমুলকান্দি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো: আজাহারুল ইসলাম, যোগেন্দ্র চন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো: আলী হোসেন, কমলপুর হাজী জহির উদ্দিন স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো. শাফায়েত হোসেন, শ্রীনগর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক খলিলুর রহমানসহ শতাধিক শিক্ষক ও শিক্ষিকাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
বক্তারা বলেন, আধুনিক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গঠনে সুষম, সুস্থ ও পরিছন্ন মানবিক সমাজ গড়তে সার্বজনীন শিক্ষা নিশ্চিত করা জরুরি। পতিত ফ্যাসিষ্ট সরকার পরিকল্পিতভাবে মাধ্যমিক শিক্ষাকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যায় এবং জুলাই আগষ্টের বিপ্লবের মধ্যে দিয়ে ছাত্র জনতার বৈষম্য বিরোধী দেশ গড়ার নতুন স্বপ্ন দেখছেন শিক্ষকরা।
শিক্ষকরা বলেন, মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ৯৭% বেসরকারি প্রতিষ্ঠান। এইসব প্রতিষ্ঠানে শিক্ষাগত যোগ্যতা, স্যালেবাস ও একই বোর্ডের আওতায় পরীক্ষা হলেও সরকারি-বেসরকারি নাম দিয়ে আর্থিক ও সামাজিক মর্যাদায় বৈষম্য তৈরি করে রাখা হয়ছে।
মুলত শিক্ষার দুটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় একাডেমিক ও প্রশাসনিক বিভাগ । শিক্ষকেরা একাডেমিক কাজে দক্ষ। তাদের সকল প্রশিক্ষণ পেড্যাগোজি কেন্দ্রিক। ক্লাস রুমের শিক্ষণ-শিখনেও তারা দক্ষ। অন্যদিকে শিক্ষা প্রশাসনে দীর্ঘ ৩১ বছরের অভিজ্ঞতা সম্পন্ন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারদের সকল প্রশিক্ষণ প্রশাসনিক। শিক্ষকতা ও প্রশাসন ভিন্ন চরিত্র ও ভিন্ন বৈশিষ্ট্যের। শিক্ষকরা প্রশাসনিক কাজে অনভিজ্ঞ। তাই তাদেরকে জেলা শিক্ষা অফিসার ও উপ-পরিচালক পদে পদায়ন করা হলে সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক শূণ্যতা সৃষ্টি হবে।
তাছাড়া, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার পদে সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষকগণকে পদায়ন করা হলে প্রশাসনিক অনভিজ্ঞ সিনিয়র শিক্ষকের অধীনে বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও মাদ্রাসার প্রধানগণকে কাজ করতে হবে, এতে করে শিক্ষাঙ্গনে চরম অসন্তোষ সৃষ্টি হতে পারে। সে কারণে উপজেলা, জেলা, অঞ্চল ও মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মাধ্যমিক শাখায় ৩১ বছর শিক্ষা প্রশাসনে কাজের দক্ষতা সম্পন্ন ৬ষ্ঠ গ্রেডভুক্ত উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারদের পদোন্নতি ও পদায়নের জোর দাবিসহ শিক্ষার মাঠ প্রশাসনে কাজ করা ৯০-২২ বছরের দক্ষ, অভিজ্ঞ ও প্রশিক্ষিত SESIP এর জনবল রাজস্ব খাতে স্থানান্তরের অসমাপ্ত কাজ দ্রুত সম্পন্ন করা এবং বহু মাত্রিক সমস্যায় জর্জরিত মাধ্যমিক শিক্ষায় স্কুল, মাদরাসা, সরকারি, বেসরকারি, ইংরেজি ভার্সনে প্রতিষ্ঠান হওয়ার ফলে বৈষম্য আরো প্রকট আকার ধারণ করছে। তাই, দ্রুত শিক্ষা সংস্কার কমিশন করার জোর দাবি জানান তারা।
Leave a Reply